×
ব্রেকিং নিউজ :
হবিগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তরুণ নেতৃত্ব অপরিহার্য : রাশেদ খাঁন ইলিশ সংরক্ষণে চাঁদপুরে কোস্ট গার্ডের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম বগুড়ায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব পটুয়াখালীতে এনসিপির কার্যালয় উদ্বোধন দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন উৎসবে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি রাত ৯টায় উপকূল অতিক্রম করতে পারে গবেষণালব্ধ বই যুগের আলোকবর্তিকা : ধর্ম উপদেষ্টা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব বিমানবন্দরে দুর্ব্যবহার এনসিপির নেতাকর্মীদের, সংবাদ সম্মেলন বর্জন সাংবাদিকদের
  • প্রকাশিত : ২০২৫-০৪-২০
  • ৩৪৪৫৪৪৩৪ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার দ্বিতীয় দফার গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে এবং উভয় পক্ষ আগামী সপ্তাহে আবার বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছে।
রোম থেকে এএফপি জানায়, রোমে ওমানের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠক প্রায় চার ঘণ্টা স্থায়ী হয় বলে জানিয়েছেন ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা। তেহরানের শীর্ষ কূটনীতিক আব্বাস আরাগচি একে ‘সফল বৈঠক’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এতে কিছু অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি ইরানি রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেন, ‘এইবার আমরা কিছু নীতিমালা ও লক্ষ্য বিষয়ে আরও ভালো সমঝোতায় পৌঁছাতে পেরেছি।’
মার্কিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এক বিবৃতিতে জানান, ‘আজ রোমে চার ঘণ্টার এই দ্বিতীয় দফার আলোচনায় আমরা সরাসরি ও পরোক্ষ আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি।’
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাগাঈ বলেন, পক্ষগুলো আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কারিগরি পর্যায়ে পরোক্ষ আলোচনা পুনরায় শুরু এবং এরপর আগামী শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুই জ্যেষ্ঠ আলোচকের নেতৃত্বে আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তা পরবর্তী বৈঠকের কথা নিশ্চিত করলেও দিন বা স্থান নির্দিষ্ট করেননি।
ওমান জানিয়েছে, তৃতীয় দফার আলোচনা আবার মুসকটে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে এক সপ্তাহ আগে প্রথম বৈঠক হয়েছিল।
২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি পরিত্যাগ করার পর থেকে এটাই ছিল এই দুই বৈরীর মধ্যে এত উচ্চ পর্যায়ের প্রথম আলোচনা।
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে—যা তেহরান বারবার অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
শনিবারের আলোচনার পর ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আরাগচি এবং মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ আলোচনা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছেন।
তাদের বক্তব্য, এই আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি ন্যায্য, টেকসই ও বাধ্যতামূলক চুক্তিতে পৌঁছানো, যা ইরানকে পরমাণু অস্ত্র ও নিষেধাজ্ঞা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত রাখবে এবং শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের সক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আলবুসাইদি বলেন, আলোচনার গতি বাড়ছে এবং এখন এমন কিছু সম্ভব হয়ে উঠছে যা আগে অসম্ভব মনে হতো।
বাগাঈ জানান, ওমানি রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল দুই আলাদা কক্ষে অবস্থান করছিল, আর আলবুসাইদি তাদের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদান করছিলেন।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ’ নীতিকে আবার সক্রিয় করেছেন।
মার্চে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে চিঠি পাঠিয়ে পুনরায় পারমাণবিক আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানান। তবে ব্যর্থ হলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘আমি সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ব্যাকুল নই। আমার ধারণা, ইরান আলোচনায় আসতে চায়।’
শুক্রবার আরাগচি বলেন, প্রথম দফায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ‘কিছুটা আন্তরিকতা’ দেখা গেছে, তবে তিনি তাদের ‘অভিপ্রায় ও উদ্দেশ্য’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
‘গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে’
ফরাসি দৈনিক ‘ল্য মন্ড’-এ বুধবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রসি বলেন, ইরান ‘পারমাণবিক বোমা অর্জনের খুব কাছাকাছি’ রয়েছে। একদিন পর তিনি উল্লেখ করেন, আলোচনা এখন ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে’ পৌঁছেছে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ওয়াশিংটন ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসে, যার আওতায় ইরান তার কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেয়েছিল।
ট্রাম্পের প্রত্যাহারের এক বছর পর পর্যন্ত তেহরান চুক্তি মেনে চললেও পরে ধাপে ধাপে তা লঙ্ঘন শুরু করে।
আরাগচি ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক চুক্তির আলোচক ছিলেন। তার মার্কিন প্রতিপক্ষ উইটকফ একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী, যাকে ট্রাম্প ইউক্রেন ইস্যু নিয়েও আলোচনার দায়িত্ব দিয়েছেন।
বর্তমানে ইরান ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা চুক্তিতে নির্ধারিত ৩.৬৭ শতাংশের অনেক ওপরে—তবে ৯০ শতাংশ অস্ত্রমান সম্পৃক্ততার নিচে।
শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইউরোপীয় দেশগুলোকে আহ্বান জানান, তারা যেন ২০১৫ সালের চুক্তির ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া সক্রিয় করে—যার ফলে ইরানের ওপর আবার জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে। এই বিকল্প ব্যবহারের সুযোগ অক্টোবরে শেষ হবে।
ইরান আগে হুমকি দিয়েছিল, স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া সক্রিয় করা হলে তারা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে সরে যেতে পারে।
‘অপরিবর্তনযোগ্য’
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতি তেহরানের সমর্থনের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
তবে আরাগচি শনিবার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু ইস্যুর বাইরের কোনো বিষয় তোলেনি।’
তিনি আগেই বলেছিলেন, ইরানের
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার ‘অপরিবর্তনযোগ্য’, যদিও উইটকফ এটির সম্পূর্ণ স্থগিত চেয়েছিলেন। এর আগে তিনি চুক্তির সীমায় ফিরে যাওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরাইল তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে জানায়, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে তারা ‘সুস্পষ্ট কৌশলগত পথ’ অনুসরণ করছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবারও একই মনোভাব প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি এটা ছেড়ে দেব না, এ থেকে এক চুলও পিছিয়ে যাব না।’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat