×
ব্রেকিং নিউজ :
কুল চেইন উন্নয়নের জন্য সমন্বিত নীতির বাস্তবায়ন চান শিল্প উদ্যোক্তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্নি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি আন্দোলন প্রত্যাহার চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান পণ্যের দাম বাড়াতেই বিএনপির ভারত বর্জন কর্মসূচি : নাছিম কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৪ জনকে চমেকে ভর্তি যুক্তরাষ্ট্রে ছুরি হামলায় ৪ জন নিহত নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করতে রুশ গোয়েন্দা প্রধানের উ.কোরিয়া সফর : কেসিএনএ গাজায় কয়েকটি হাসপাতালের আশপাশে ইসরায়েল হামাস তুমুল লড়াই চলছে যখন দলকে আর সহযোগিতা করতে পারবো না তখন অবসরে যাব : মেসি
  • প্রকাশিত : ২০২০-১২-০২
  • ৪৩২ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

বরগুনা মুক্ত দিবস আগামীকাল ৩ ডিসেম্বর। বরগুনার ইতিহাসে স্মরনীয় দিন। ১৯৭১ সালের এদিনে বরগুনাবাসী হানাদার মুক্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধে বরগুনা ছিল নবম সেক্টরের বুকাবুনিয়া সাব-সেক্টরের অধীন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের পরে বরগুনার মুক্তিকামী সহস্রাধিক তরুণ বাঁশের লাঠি, গুটি কয়েক রাইফেল, বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করে। এরই মধ্যে পাকবাহিনী দুর্বল প্রতিরোধকে উপেক্ষা করে পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালী জেলা দখল করে ফেলে। ব্যাপক ধ্বংস যজ্ঞ ও ক্ষয়-ক্ষতির ভয়ে বরগুনার মুক্তিযোদ্ধারা এলাকা ছেড়ে চলে যান, কেননা পাক হানাদার বাহিনীকে মোকাবেলা করার মতো তাদের কোন অস্ত্র ছিলনা। পাক বাহিনী বিনা বাধায় বরগুনা শহর দখল করে নেয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বরগুনার বিভিন্ন থানা ও তৎকালীন মহাকুমা সদরে পাক বাহিনী অবস্থান করে পৈশাচিক নারী নির্যাতন ও নির্বিচারে গণহত্যা চালায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা, বরগুনার সাবেক সাংসদ ও বর্তমান জেলা চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি চারণে জানান, ২৯ ও ৩০ মে বরগুনা জেলখানায় ৭৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয় । সময়ের ব্যবধানে কয়েক মাসের মধ্যেই বরগুনার মুক্তিযোদ্ধারা শক্তি অর্জন করে মনোবল নিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন। বরগুনা, বামনা, বদনীখালী ও আমতলীতে যুদ্ধের পরে পাকবাহিনীর সদস্যরা বরগুনা ট্রেজারি ও গণপূর্ত বিভাগের ডাকবাংলোয় অবস্থান নেয়। মুক্তিযোদ্ধা হেড কোয়ার্টারের নির্দেশ পেয়ে বুকাবুনিয়ার মুক্তিযোদ্ধারা ৭১ এর ২ ডিসেম্বর বরগুনার বেতাগী থানার বদনীখালী বাজারে আসেন। রাত তিনটার দিকে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সত্তার খানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা নৌকা যোগে বরগুনার খাকদোন নদীর পোটকাখালী স্থানে অবস্থান নেন। সংকেত পেয়ে ভোর রাতে তারা কিনারে উঠে আসেন। তারা দলে ছিলেন মাত্র ২১ জন। যাদের মধ্যে ১০ জন বরগুনার ও বাকী ১১ জন ঝালকাঠির।
স্মৃতিচারণ করে মুক্তিযোদ্ধারা জানান, কারাগার, ওয়াপদা কলোনী, জেলা স্কুল, সদর থানা, ওয়ারলেস ষ্টেশন, এসডিওর বাসাসহ বরগুনা শহরকে কয়েকটি উপ-বিভাগে ভাগ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা যে যার অস্ত্র নিয়ে অবস্থান অনুযায়ী শীতের সকালে ফজরের আজানকে যুদ্ধ শুরুর সংকেত হিসেবে ব্যবহার করেন। আজান শুরুর সাথে সাথে ৬টি স্থান থেকে একযোগে ফায়ার করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। দ্বিতীয় দফা ফায়ার করে তারা জেলখানার দিকে এগোতে থাকেন। চারজন সহযোগীসহ সত্তার খান ছিলেন, কারাগার এলাকায়। তারা এসময় জেলখানায় অবস্থানরত পুলিশ ও রাজাকারদের আত্মসমর্পন করিয়ে এসডিও অফিসের সামনে নিয়ে আসেন। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা গিয়ে স্বাধীনতাকামী তৎকালীন এসডিও আনোয়ার হোসেনকে আত্মসমর্পন করান। দুপুর বারোটার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা প্রশাসনিক দায়িত্ব এসডিওকে সাময়িকভাবে বুঝিয়ে দিয়ে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বুকাবুনিয়া সাব-সেন্টারে চলে যান।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মনোয়ার জানিয়েছেন, বরগুনা জেলা সদর হানাদার মুক্ত হওয়ার আগে ১৯৭১ সালের ২৪ নভেম্বর তারিখে আরেকটি এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদারদের তাড়িয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে সেটি বামনা উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। বেতাগি উপজেলা ১ ডিসেম্বর, আমতলী ও তালতলী উপজেলা ১৪ ডিসেম্বরে মুক্ত হয়েছিল।
বরগুনায় হানাদার মুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে শিশু সংগঠন খেলাঘর আসরসহ সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো র‌্যালী ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। তাদের সাথে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে বরগুনা প্রেসক্লাব ও স্থানীয় কমিউনিটি রেডিও লোকবেতার লোকবেতারের পরিচালক সাংবাদিক মনির হোসেন কামাল একথা জানান। এছাড়াও শহীদ গণকবরে পুস্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat