×
ব্রেকিং নিউজ :
তথ্য কমিশন বাংলাদেশ ৬টি অভিযোগের নিষ্পত্তি করেছে কৃষকের দামে তরমুজ বিক্রির কার্যক্রম পরিদর্শন কৃষিমন্ত্রীর অবন্তিকার আত্মহত্যায় প্ররোচনা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন নামঞ্জুর উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন : পরিবেশমন্ত্রী কুল চেইন উন্নয়নের জন্য সমন্বিত নীতির বাস্তবায়ন চান শিল্প উদ্যোক্তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্নি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি আন্দোলন প্রত্যাহার চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান পণ্যের দাম বাড়াতেই বিএনপির ভারত বর্জন কর্মসূচি : নাছিম কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৪ জনকে চমেকে ভর্তি
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৪-০৪
  • ৭৭৭ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

সুখ শান্তি ও পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের কেন্দ্রস্থল আল্লাহ প্রদত্ত ইসলাম; যার প্রতিটি বিধান কল্যাণকর মানব-দানব সবার জন্য। আধুনিক প্রগতিশীলরা পাশ্চাত্য ও ইউরোপের রঙিন চশমা পরে খুঁজতে থাকে ভুলভ্রান্তি।
ফলাফলে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে ইসলামে-এমন সংখ্যাও কম নয়। তাই তো কালের পালাবদলে ইসলাম নোঙ্গর ফেলেছে পৃথিবীর দুয়ারে দুয়ারে। প্রতীয়মান হয়েছে ইসলামের সৌন্দর্য ও নানাবিধ কল্যাণ। রোজা ইসলামের পঞ্চম স্তরের একটি, যা বান্দার প্রতি আল্লাহ আবশ্যক করেছেন। কিন্তু তা নিয়ে নেতিবাচক ধারণার কমতি নেই।
গর্ব করেই বলতে হয়, আধুনিক যুগের চিকিৎসা বিজ্ঞান রোজার ব্যবহারিক তাৎপর্য উপলব্ধি করে তার সত্যতা প্রমাণ করেছে। ইউরোপের ঘরে ঘরে ইদানীং রোজা রাখার হিড়িক পড়েছে। সবার মুখে শোনা যাচ্ছে-শরীরটাকে ভালো রাখতে চাও তো রোজা রাখ। জার্মানির স্বাস্থ্য ক্লিনিকের ফটকে বড় অক্ষরের টাঙানো আছে-রোজা রাখ স্বাস্থ্যবান হবে।
খ্রিষ্টান চিকিৎসকরা রোজার উপকারিতা নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা চালিয়েছেন। বিখ্যাত কিতাব সিরাতে হালাবিয়াতে বর্ণিত আছে, মুসলমানের চিকিৎসায় মিসরের সম্রাট মুকাউকাস একজন ডাক্তার পাঠায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন-আমরা এমন এক জাতি, যারা ক্ষুধা লাগলে খাই না এবং খেলেও ক্ষুধা বাকি থাকতে খাওয়া ত্যাগ করি।
পেট ভর্তি করে খাওয়া অপেক্ষা মানুষের জন্য মন্দ দ্বিতীয় কোনো কাজ নেই। আদম সন্তানের টিকে থাকার জন্য কয়েক লোকমাই যথেষ্ট। পেটের এক-তৃতীয়াংশ পানি এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখা উচিত (আহমদ ইবনে মাযাহ)।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, দীর্ঘজীবন লাভের জন্য খাওয়া-দাওয়ার প্রয়োজন বেশি নয়; বরং পরিমিত খাওয়াটাই দীর্ঘজীবন লাভের চাবিকাঠি।
বছরে এক মাস রোজা রাখার ফলে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায়। এটা অনেকটা শিল্পকারখানার মতো। আধুনিক পৃথিবীতে রোজার প্রতি চেতনা সৃষ্টি করার পেছনে ৭০ দশকের একটি বই অনন্য ভূমিকা পালন করেছে বিখ্যাত জার্মান চিকিৎসাবিদের The secret of successful অর্থাৎ ‘উপবাসের গোপন রহস্য’ বইটি। বইটিতে লেখক মানুষের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন ও কার্যপ্রণালি বিশ্লেষণ করে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে বছরে কতিপয় দিন উপবাসের অভ্যাসের কথা বলেছেন। তার মতে, উপবাস খাবারের উপাদান থেকে সারা বছর শরীরে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ (টক্সিন), চর্বি ও আবর্জনা থেকে মুক্তি দান করে।
শরীরের জমে থাকা বিষগুলো রমজানে নির্গত হয়, যা ধ্বংস না হলে শরীরে উচ্চরক্তচাপ, একজিমা, পেটের পীড়া ইত্যাদি রোগ জন্ম নেয়। উপবাসে কিডনি ও লিভারের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রোজা রাখলে শরীর দুর্বল হয়, মাথায় চক্কর দেয় কিংবা ঘুমের প্রকোপ বেশি হয় বলে যেসব কথা প্রচলিত রয়েছে, তা ভুল প্রমাণ করেছেন মিসরের জাতীয় গবেষণাগারের প্রাণ-রসায়ন বিষয়ের শিক্ষিক ডাক্তার মোহাম্মদ সাইয়েদ।
তিনি বলেন, রোজার মধ্যে দিনের খাদ্য গ্রহণ না করায় শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা আলফা-১ ও গামা নামক প্রোটিন বৃদ্ধি পায়। ফলে তা ক্যালসিয়াম জমতে বাধা দেয়। আর ক্যালসিয়াম জমেই সৃষ্টি হয় পাথর। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, রমজানে তা গঠিত হতে পারে না।
একাদশ শতাব্দীর বিখ্যাত মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানী ইবনে-সিনা রোগীদের ৩ সপ্তাহের জন্য উপবাস পালনের বিধান দিতেন। ইসলামের একটি কল্যাণকামী বিধান রোজা নিয়ে ১৯৫৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডাক্তার মুয়াযযম কর্তৃক (মানব শরীরের ওপর রোজার প্রভাব) গবেষণায় উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য; যেমন-রোজা মানব শরীরের কোনো ক্ষতি করে না, কেবল সামান্য ওজন কমায়। যারা মনে করে, রোজা রাখলে শূলবেদনা বেড়ে যায়, তাদের এ ধারণা নিতান্তই অবাস্তব। কারণ, উপবাসে পাকস্থলীর এসিড কমে এবং খেলেই বাড়ে। এ অতীব সত্য কথা না জেনে অনেক ডাক্তার শূলবেদনার রোগীকে রোজা রাখতে নিষেধ করেন।
পবিত্র রমজানের অন্য একটি ইবাদত তারাবি নিয়েও চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা থেমে নেই। মিসরের শিক্ষিকা ডাক্তার সালওয়া রুশদি ৬০ বছর বয়সের বেশি নারী-পুরুষের ওপর চার বছরব্যাপী এক মাস করে গবেষণা করে দেখেন, তারাবি নামাজ হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও শরীরের পেশি মজবুত করে। মেরুদণ্ডসহ শরীরের অন্যান্য সংযোগস্থল নমনীয় করে ও রক্তপ্রবাহকে অধিক ক্রিয়াশীল করে। তারাবিতে বেশি রুকু ও সিজদার ফলে রক্ত চলাচল ও শ্বাস গ্রহণ প্রক্রিয়ার উন্নতি হয়। গবেষকরা আরও বলেন-পিঠে, জয়েন্টে ও মাংসপেশিতে যত ব্যথাই থাকুক না কেন; তার উচিত তারাবি পড়া।
এভাবে ইসলামের প্রতিটি বিধান নিয়েই চলছে চুলচেরা বিল্লেষণ। বিজ্ঞানের উন্নতিতে আজ পুরো পৃথিবী জানতে পারছে, ইসলামই হচ্ছে সুখ ও কল্যাণের চাবিকাঠি। আসুন, জীবনে সফলতা লাভের উদ্দেশ্যে রোজা রাখার নিয়তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। আর তাতেই নিহিত আছে মানুষের আরোগ্যলাভের গোপন রহস্য। সিয়াম সাধনায় আমরা হব স্বাস্থ্যবান ও পবিত্র আত্মার অধিকারী। আল্লাহ আমাদের সিয়াম ও তারাবি ভালোভাবে আদায় করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat