দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট সালভা কির মায়ারদিত নতুন আফ্রিকান জাতির উন্মুক্ত পররাষ্ট্র নীতির সুবিধার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার এবং উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে আরও বিনিয়োগ করার ও সম্পৃক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ থেকে আরো বিনিয়োগ গ্রহণ এবং তার দেশে সম্পৃক্ত হওয়ার ব্যাপারে তার সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। দেশটিতে বাংলাদেশী জাতিসংঘ শান্তি রক্ষীদের একটি বিশাল দল মোতায়েন রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ সুদান সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন শনিবার জুবায় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে মায়ারদিত এই প্রস্তাব দিয়েছেন।
বৈঠকে প্রেসিডেন্ট দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পরিকাঠামোগত ও সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের ব্যাপক অবদানের প্রশংসা করেন।
মায়ারদিত এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, তারা উভয় দেশের রাজধানীতে মিশন কার্যালয় খোলার মাধ্যমে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার কথা বিবেচনা করবেন।
বৈঠকে তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সামগ্রিক দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে সম্মত হন।
ড. মোমেন এ সময় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণের শুভেচ্ছা বার্তা দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট ও সেদেশের জনগণকে পৌঁছে দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও অবদান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন।
মোমেন উন্নয়নের পথ যাত্রায় বাংলাদেশের অর্জিত অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান দক্ষিণ সুদানের সঙ্গে বিনিময় করার প্রস্তাব দেন।
তারা কৃষি, আইসিটি, শিক্ষা, সামরিক সহযোগিতা, সাউথ-সাউথ সহযোগিতা, যোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করেন।
প্রেসিডেন্ট মায়ারদিত বাংলাদেশের উন্নয়নকে স্বীকৃতি দেন এবং সহায়তা ও সহযোগিতা প্রসারের প্রস্তাবের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
ড. মোমেন দক্ষিণ সুদানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মারিয়াম আল-সাদিক আল-মাহদির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং কৃষি, আইসিটি এবং বিশেষ করে শান্তিরক্ষা খাতে বাংলাদেশের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করার প্রস্তাব দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধায় সুদানের ভবিষ্যত শান্তিরক্ষীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রস্তাব দেন।
সাউথ-সাউথ সহযোগিতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে জোরদার করতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে শিক্ষা ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে সুদানকে সহায়তা দেবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমান পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে এবং বিগত বছরগুলোতে সাক্ষরিত বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক চুক্তিকে জোরদার করে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে সম্মত হন।
সুদানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর অপরিসীম অবদানের জন্য গভীর প্রশংসা ব্যক্ত করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুদানে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সঙ্গেও দেখা করেন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতি গঠনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।