×
  • প্রকাশিত : ২০২১-০৮-২৯
  • ৫৮৯ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাইল ছবি

এটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেছেন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিমকোর্ট বার) প্যাডে রাজনৈতিক বক্তব্য কাম্য নয়। সুপ্রিমকোর্ট বার সকলের আর রাজনীতি হলো যারা যার ব্যক্তিগত। এটর্নি জেনারেল বলেন, সুপ্রিমকোর্ট বার-এ যারা নির্বাচিত হন, তারা মূলত আইনজীবীদের কল্যাণে কাজ করে থাকেন। তারা অনেকেই কিন্তু রাজনীতি করেন। সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু সমিতির প্যাড ব্যবহার করে বিবৃতি দিয়ে তিনি (সুপ্রিমকোর্ট বার সম্পাদক ব্যারিস্টার মোঃ রুহুল কুদ্দুস কাজল) ভুল করেছেন। পরে এটি তিনি নিজেই বুঝতে পারবেন। 
এএম আমিন উদ্দিন বলেন, সুপ্রিমকোর্ট বার-এর ঐতিহ্য ও সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা হচ্ছে। বার-কে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার কাম্য নয়। তিনি এর নিন্দা জানান। এটর্নি জেনারেল বলেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কাজ হলো বারের আইনজীবীদের সুবিধা অসুবিধা দেখা, আইনগত পরিবেশ উন্নত করা এবং আইনজীবীদের পেশাগত মানোন্নয়নে কাজ করা। এটর্নি জেনারেলের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আজ এ কথা বলেন। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির প্যাড ব্যবহার করে ব্যারিস্টার মোঃ রুহুল কুদ্দুস কাজল কাজলের এমন বিবৃতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এটর্নি জেনারেল আজ তার প্রতিক্রিয়া জানান।
শনিবার ২৮ আগস্ট সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির অফিসিয়াল প্যাডে বার-এর সম্পাদক ব্যারিস্টার মোঃ রুহুল কুদ্দুস কাজলের একটি বক্তব্য সমিতির প্যাডে সুপ্রিমকোর্ট বার-এর সিনিয়র সহ-সম্পাদক মাহমুদ হাসান স্বাক্ষরিত একটি বার্তা গনমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
এদিকে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির প্যাড ব্যবহার করে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পক্ষে বিবৃতি দেয়ায় পাল্টাপাল্টি মিছিল-স্লোগানে উত্তাল ছিল আজ সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ। মিছিল আর স্লোগানের মধ্যেই পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছে আইনজীবী সমিতির আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী নেতারা।
আজ বেলা ১টা ১০ মিনিট থেকে আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা নিজ নিজ দলের পক্ষে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এর মধ্যেই সোয়া ১টায় সমিতির সম্পাদকের কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন সম্পাদক ব্যারিস্টার মোঃ রুহুল কুদ্দুস কাজল। এরপর আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি এডভোকেট মুহাম্মদ শফিক উল্লাহের নেতৃত্বে সমিতির এক নম্বর হল রুমে অপর সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত বক্তৃতায় এডভোকেট মুহাম্মদ শফিক উল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারির বরাত দিয়ে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ-সম্পাদক এডভোকেট মাহমুদ হাসান স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির প্যাড ও স্বারক ব্যবহার করে জনসম্মুখে সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের ব্যক্তিগত বক্তব্যকে প্রচার করে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পায়তারা করেছে মাত্র। এই বিবৃতি একান্তই তার ব্যক্তিগত বক্তব্য, যা সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নয়। কারণ ইতোপূর্বে সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি-সম্পাদক থেকে অনেকেই জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। বর্তমানেও অনেকে আছেন। কিন্তু, আইনজীবী নেতারা নিজ স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনকে কখনই রাজনৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেননি।’ তিনি বলেন, ‘দল-মত নির্বিশেষে নিরপেক্ষতার প্রশ্নে সব সময় তারা ছিলেন বদ্ধপরিকর ও আপোষহীন। অথচ আজ সুপ্রিমকোর্ট বারের প্যাড ব্যবহার করে নিজ রাজনৈতিক দলের মত প্রকাশ করার মতো সস্তা রাজনীতি করে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের দীর্ঘদিনের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার চক্রান্ত শুরু হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে খন্দকার মোশতাক আহমেদ ও জিয়াউর রহমানসহ কিছু ব্যক্তি পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে কনফেডারেশন করার জন্য ষড়যন্ত্র করেছিল। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু যখন দেশ গড়ার কাজে ব্যস্ত তখন জিয়াউর রহমান দেশে অরাজক সৃষ্টিকারী গণবাহিনী ও সর্বহারা বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতা করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতিকারী সৈনিক জিয়া ও মোশতাকের ষড়যন্ত্রের উদ্দেশ্য সফল করার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্যদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করে।’ তিনি বলেন, ‘জিয়া সামরিক আইন জারি করে বন্দুকের নল দ্বারা ক্ষমতায় প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। পঁচাত্তর পরবর্তী খুনি জিয়াউর রহমান সামরিক বাহিনীতে গুপ্ত হত্যা, রাজনীতিবিদদের হত্যাসহ এমন কোনো কর্মকান্ড নেই যা করেননি। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের বক্তব্য তার দলীয় বক্তব্য যা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বক্তব্য নয়। বরং তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্যাড ও স্বারক তাদের হীন দলীয় ও রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে বারের ঐতিহ্য ও রীতিনীতি লঙ্ঘনের মতো জঘন্য অপরাধ করেছেন।’
গত ২৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্যাডে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ’ শীর্ষক শিরোনামে বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার মোঃ রুহুল কুদ্দুস কাজলের বক্তব্যের একটি বিবৃতি দেয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat