চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, করোনাকালীন সংকট মোকাবেলায় লকডাউনের মধ্যেও আমরা জনগুরুত্বপূর্ণ জরুরি সেবা কাজ চলমান রাখলেও অনেক ক্ষেত্রেই পরিস্থিতিগত কারণে কাক্সিক্ষত সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়নি। এখন লকডাউন ওঠে যাওয়ায় নগরীকে সর্বসাধারণের বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে সক্ষমতা ও সামর্থ্য অনুযায়ী দৃশ্যমান সমস্যার আশু সমাধান এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য টেকসই উন্নয়ন অভিযাত্রায় চসিকের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের সকলকে একযোগে দায়িত্ব পালনে নিবেদিত হতে হবে।
তিনি আজ রোববার সকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পুরাতন নগর ভবনের কেবি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত চসিক ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৭ম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন।
তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজস্ব আদায় খাতে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, চসিক কখনো সরকার থোক বরাদ্দের ওপর নির্ভলশীল ছিল না এবং এখনো নেই। তাই রাজস্ব বিভাগকে আরো বেশি গতিশীল হতে হবে। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কোথায় কোথায় অসমাঞ্জস্য বা কর নির্ধারণগত ত্রুটি বিচ্যুতি ও পরিসংখ্যানগত জরিপের অভাব রয়েছে তা চিহ্নিত করে হালনাগাদ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যৌক্তিক আয়ের পরিধি বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে এ ক্ষেত্রে যেন করদাতাদের প্রতি কোন অবিচার অন্যায় চাপ প্রয়োগ না হয়।
তিনি চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, এই বিভাগে দক্ষ ও যোগ্য জনবল এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। আবার বাড়তি ও অপ্রয়োজনীয় জনবলও রয়েছে। এ ছাড়া অত্যাধুনিক পরিচ্ছন্ন সরঞ্জাম এবং মশক নিধন সংক্রান্ত কার্যকরি ওষুধেরও অভাব রয়েছে। যে ওষুধগুলো ছিটানো হয় তার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন থাকায় চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগকে পর্যবেক্ষণ ও যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব দেয়ার পর তারা যে প্রতিবেদন পেশ করেছে সেই ভিত্তিতেই চট্টগ্রাম নগরীতে মশক নিধন কার্যক্রম চলমান থাকবে। নগরীর নালা-নর্দমা-খাল সংস্কারের জন্য ২ হাজার ৫ শত কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
বিদ্যমান জলাবদ্ধতা সংকট সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকারের প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার দু’টি মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলো মূলত সিডিএ বাস্তবায়ন করছে। বার বার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে - এ নিয়ে চিন্তায় আছি। কেননা চট্টগ্রাম নগরীতে ৫৭ টি খালের মধ্যে ৩৩ টি খাল সিটি কর্পোরেশনের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এই খালগুলোর পুনরুদ্ধার সংস্কার ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন কতটুকু সফল হতে পারে তা বুঝতে পারছি না। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন খালের ওপর যে বাঁধগুলো দেয়া হয়েছিল এবং এখনো আছে সেগুলো অপসারণের কথা দিয়েও তা করা হয়নি। এ কারণে এবার বর্ষা মৌসুমে নগরীতে জলাবদ্ধতা প্রকট হয়েছে, ফলে নালা-নর্দমাÑখালে পড়ে গিয়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনর সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, প্যানেল মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।