×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-০৪
  • ৬৪১ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

হাওরাঞ্চলের মানুষের উন্নত জীবনযাপনের বিষয়টি বিবেচনা করেই বন্যাসহ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি আজ বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতি আয়োজিত ‘ সিলেট অঞ্চলে ঘন ঘন বন্যা ঃ কারণ, পূনর্বাসন ও স্থায়ী সমাধান’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
এম এ মান্নান বলেন, “ এটা (বন্যা) হবে, তা মোকাবেলা করতে হবে। তাই বলে উন্নয়ন কাজ বন্ধ করব, তা হতে পারেনা। কারণ, তাদেরও ভাল জীবনমান দিতে হবে।”
মন্ত্রী বলেন, ভয়াবহ বন্যায় যেভাবে স্থাপনা ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে, সেভাবে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেনি। কোন সড়কই বন্যার কবল থেকে রেহাই পায় নি, তবে ছোট সড়কগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার উপযোগী করে নির্মাণ করায় প্রাণহানির সংখ্যা ব্যাপকভাবে সীমিত সংখ্যায় রাখা সম্ভব হয়েছে।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, হাওর অঞ্চলে যে ‘ মবিলিটি’ তৈরি হয়েছিল, তা কবে ফিরে পাওয়া যাবে, তা কেউ বলতে পারবে না।
কৃষিক্ষেত্রে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, কৃষি পুনর্বাসনের জন্য সার, বীজ, কীটনাশকসহ প্যাকেজের মাধ্যমে বিশেষ সহায়তা দেয়া হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সহায়তা কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
বন্যা কবলিত লোকজনের বাড়ীতে ফিরতে বিলম্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাওরাঞ্চলের বেশির ভাগ বাড়ীর ফ্লোর কাঁচা মাটির তৈরি। পানি নেমে গেলেও ফ্লোর বসবাসের জন্য উপযোগী হয়ে উঠছে না। তাই দূর্গম হাওরাঞ্চলের মানুষ বাড়ী ফিরতে পারছে না।
তিনি বলেন, সরকারীভাবে গরীব মানুষের ঘরের ফ্লোরগুলো পাকা করে দেয়ার বিষয়ে এবং অন্ততপক্ষে চারটি পাকা খুঁটি দেয়ার বিষয়ে অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে প্রস্তাব করা হবে।
সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতি, ঢাকার সভাপতি আজিজুল পারভেজের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।
সভায় বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পদ্মা সেতু প্রকল্প বিশেষজ্ঞ প্যানেল, ইমেরিটাস অধ্যাপক ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এম ফিরোজ আহমেদ, বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কামরুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি-বেলা’র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মতীন উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামাল, ইনস্টিটিউট অব প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-আইপিডি’র পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম ও রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার-আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ।
এতে ত্রাণ বিতরণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন প্রতিদিনের বাংলাদেশ’র সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি এবং ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন অনুষ্ঠান আয়োজক উপ-কমিটির আহবায়ক এহসানুল হক জসিম।
মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, হাওরবাসীকে বন্যা থেকে রক্ষা করতে হলে সুরমা, কুশিয়ারাসহ সিলেট অঞ্চলের সকল নদনদী, খাল ও হাওরগুলো খনন করতে হবে। এতে নদী, খাল ও হাওরগুলোর পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়বে। ফলে কিছুটা হলেও হাওরবাসী উপকৃত হবে।
ইমরান আহমেদ বলেন, হাওরাঞ্চলে ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বার মানুষদের মতো বা মুন্সিগঞ্জ জেলার মানুষের মত করে বাড়ী-ঘর নির্মাণ করা দরকার। তাহলে যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে বন্যার সময় বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে। আর ঘরের নিচের জায়গাতেও গবাদি পশু পালনসহ যে কোন ধরনের কাজে ব্যবহার করা যাবে।
স্পনশরশীপের মাধ্যমে খাল খননের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরো বলেন, ছোট একটি খাল খনন করতে প্রায় ১০ লাখ টাকা হলেই হয়ে যায়। আর সিলেট অঞ্চলে অনেক প্রবাসী আছে, যাদের কাছে এই টাকা কোন বিষয়ই নয়। অনেকেই এই বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করবে।
একে এম এনামুল হক শামীম বলেন, দেশের বেশির ভাগ নদী প্রতিবেশীদেশগুলো থেকে উৎপন্ন হয়ে আমাদের দেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। তাই যৌথ নদী কমিশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদে অন্ততপক্ষে যাতে আরো একটি যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক হয়, সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat