পোস্তগোলা জাতীয় মহাশ্মশানের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি আজ পোস্তগোলা জাতীয় মহাশ্মশান উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময়কালে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষিত আমাদের পোস্তগোলা জাতীয় মহাশ্মশান উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম। এক কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এখানে শৌচাগার, নতুন করে গ্যাস চুল্লিসহ আধুনিক শ্মশানের ব্যবস্থা করছি। সকল রকম সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে, চাহিদা নিরূপণ করে এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আশা করছি দ্রুত এ কাজটা সম্পন্ন হবে। নির্মাণের সময় যাতে করে বিকল্প ব্যবস্থায় শ্মশানের কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়, সেটাও আমরা নিশ্চিত করব। এছাড়াও এখানে যারা থাকেন তাদেরও বসবাসের জন্য একটি ব্যবস্থা করব।’
এ সময় দখলদারিত্ব উচ্ছেদে চলমান কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন মার্কেটে বিভিন্ন চক্র বিভিন্ন সময়ে কাগজ বানিয়ে অবৈধভাবে দোকান নিয়েছে, দখল করেছে এবং তারা তাদের মতো করে এখানে নানারকম অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। এতে যারা প্রকৃত দোকানদার বা ব্যবসায়ী তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সিটি কর্পোরেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সকল অবৈধ দখলদার, অবৈধ দোকানদার উচ্ছেদে কার্যক্রম নিয়েছি। এরই ফলশ্রুতিতে নীলক্ষেতে অবৈধভাবে দীর্ঘদিনের দখলকৃত একশ’র ওপরে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করছি। তবে কেউ যদি প্রকৃত দোকানদার থাকে তাহলে তাদের জন্য অবশ্যই বিকল্প দোকানের ব্যবস্থা করে দিব। প্রকৃত ব্যবসায়ী, প্রকৃত দোকানদারদের কাছে আমরা অবশ্যই দায়বদ্ধ। তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করব। তবে অবৈধভাবে যারা ছলছাতুরি করে বিভিন্নভাবে সিটি কর্পোরেশনের জমি, দোকান দখলে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।’
ডেঙ্গু নিয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবার বর্ষা মৌসুম বর্ধিত হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সেপ্টেম্বরের পর থেকেই হঠাৎ করে বিভিন্ন মাত্রায় এবং থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব বা ডেঙ্গু রোগের বিস্তার দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের পর থেকে ডেঙ্গু রোগের বিস্তার কমে আসে। কিন্তু এবার দেখছি তার উল্টো হয়েছে। আমরা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এটাকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম হলেও অক্টোবর থেকে সেটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে মাত্র ৪৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এখনো ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি।’
এ সময় তিনি ডেঙ্গু রোগে শিশু মৃত্যু হার কমাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও বেশি সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।
সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব আকরামুজ্জামান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাফর আহমেদ, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডসমূহের কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর, দক্ষিণ সিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।