×
ব্রেকিং নিউজ :
দক্ষতার সাথে দ্রুত কাজ করার তাগিদ গণপূর্তমন্ত্রীর গোপালগঞ্জে মুকসুদপুরে অভিযোগ প্রতিকার বিষয়ক সমন্বয় সভা নড়াইলে দুস্থদের মাঝে বিনামূল্যে ছাগল বিতরণ বিলাইছড়িতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ পিরোজপুরে ঈদ-উল ফিতরে ৩ লক্ষ দরিদ্র মানুষ পাচ্ছে ৯০৯ মেট্রিক টন চাল প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসি এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হলেন সৈকত রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপনে বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রশংসায় ডোনাল্ড লু মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায় : ওবায়দুল কাদের
  • প্রকাশিত : ২০২২-১২-০৬
  • ৫৮৭ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

এ বছর সিলেট বিভাগে চার জেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন চলছে কৃষকের ঘরে ফসল তোলার উৎসব।এ বছর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার দাবি করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। বন্যা, অতিবৃষ্টি, আবার কখনো বা অনাবৃষ্টি। বছর জুড়েই ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে সব দুর্যোগ অতিক্রম করে এবার অগ্রাহয়ন মাসে আমনের বাম্পার ফলন দেখে কৃষক-কৃষাণীর মুখে এখন আনন্দের হাসি ফুটেছে। তারা মেতে উঠেছেন ফসল তোলা উৎসবে। ইতোমধ্যে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত বিভাগে রোপা আমন ধান কাটা হয়েছে প্রায় ৬০ ভাগ। সিলেট বিভাগের চার জেলায় শ্রমিক সংকট নিরসনে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের উন্নয়ন সহায়তার মাধ্যমে কম্বাইন্ড হারভেস্টার, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, রিপার, মাড়াই যন্ত্রের সহযোগিতা দেয়াসহ কৃষককে বিনামূল্যে উন্নত জাতের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগের চার জেলার মধ্যে এ বছর সবেচেয়ে বেশি আমন ফলন হয়েছে সিলেট জেলায়। এরপর যথাক্রমে মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে। বিভাগের চার জেলায় এ বছর রোপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। আর আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৬ হেক্টর জমি। এ বছর হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধান মিলে বিভাগে ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলায় এবছর ১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আর চাষ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭৩ হেক্টর জমি। এবছর চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯৩০ মেট্রিক টন। তবে তা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ধান কাটার সুবিদার্থে কৃষকদের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের ধান কাটার মেশিন ও বিনামূল্যে উন্নত জাতের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলায় এ বছর আমন চাষাবাদে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে। আর চাষ করা হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমি। চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৬৩ মেট্রিক টন।
হবিগঞ্জ জেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮০ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে। আর চাষ করা হয়েছে ৮৮ হাজার ২৫৮ হেক্টর জমি। চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ৩৭১ মেট্রিক টন।
সুনামগঞ্জ জেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮১ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। আর চাষ করা হয়েছে ৮২ হাজার ২১৫ হেক্টর জমি। চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৬ মেট্রিক টন।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর সুনামগঞ্জের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, সুনামগঞ্জ জেলায় মোট কৃষি জমির ৩০ ভাগ জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। বাকি জমিতে নীচু এলাকায়,সেগুলোতে বোরো চাষ করা হয়ে থাকে। তার জেলায় ইতোমধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশ জমিত আমন ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জমিতে ধান কাটতে আরও ৮-১০ দিন সময়। সুনামগঞ্জে এবছর আমন ধানের ফলন প্রতি হেক্টরে সোয়া ৪ মেট্রিক টন ধান উপাদন হয়েছে- যা বিগত ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে সর্বাধিক।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন খান জানান, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে জেলাতে এবার রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমি। এতে ৪ লাখ ১৫ হাজার ৪৫৬ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। চলতি বছর হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধান মিলে বিভাগে ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
তবে এবার চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
তিনি জানান, সব ধান এক সাথে পাকায় ধানকাটার মানুষের সংকট দেখা দিয়েছে। তাবে ধান কাটার জন্য প্রচুর মেশিন মাঠে দেয়া হয়েছে। তাই শ্রমিক সংকটে কৃষকের ধান উঠাতে কোন অসুবিধা হবে না।
আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যে বিভাগের চার জেলার সকল ধান কাটা সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদি।
সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকা গোয়াইনঘাটের দ্বারিখেল এলাকার ৮০ বছর বয়ষোর্ধ কৃষক মোঃ জমসেদ আলী বলেন, এ বছর ভয়াবহ বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর এ মৌসুমে আমন ধানের যে ফলন হয়েছে- তাতে আমরা অনেক খুশি। এ বছর বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ইরি ফসলের যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে- এরপর এ ফসল পেয়ে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি।
সরকারের যান্ত্রিক সহায়তায় ফসল কাটতে এবং তুলতে খুবই সহায়ক হয়েছে বলে মন্তব্য করে এজন্য তিনি সরকার ও কৃষি বিভাগকে ধন্যবাদ জানান। একই সাথে তিনি কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের নিকট দাবি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat