×
ব্রেকিং নিউজ :
হবিগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তরুণ নেতৃত্ব অপরিহার্য : রাশেদ খাঁন ইলিশ সংরক্ষণে চাঁদপুরে কোস্ট গার্ডের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম বগুড়ায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব পটুয়াখালীতে এনসিপির কার্যালয় উদ্বোধন দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন উৎসবে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি রাত ৯টায় উপকূল অতিক্রম করতে পারে গবেষণালব্ধ বই যুগের আলোকবর্তিকা : ধর্ম উপদেষ্টা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব বিমানবন্দরে দুর্ব্যবহার এনসিপির নেতাকর্মীদের, সংবাদ সম্মেলন বর্জন সাংবাদিকদের
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০১-১৫
  • ৭৮৭৬৯৩২ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলায় আজ (সোমবার) ছিল মানুষের উপচেপড়া ভীড়। সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে খোয়াই নদীর অপরপ্রান্তের দুইশ’ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলায় ভীড় জমায় ক্রেতারা। কেউ কেউ আবার এসেছিল  বড় বড় মাছ দেখতে। মাছের পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসেছিল এই মেলায়। মেলা উপলক্ষে ওই এলাকায় উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। নাইওর এসেছেন মেয়ে ও জামাই। নিমন্ত্রণ করা হয়েছে আত্মীয়-স্বজনকেও।
সরজমিনে দেখা যায় দীর্ঘ এলাকায় মাছ নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। মেলায় উঠেছে বিরাট বিরাট সব মাছ। দুই শতাধিক দোকানে মাছের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। দূর-দূরান্ত থেকে দলে দলে লোকজন মেলায় এসেছেন মাছ কিনতে। খালিহাতে ফিরেনি কেউ। সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী মাছ কিনে খুশিমনে বাড়ি ফিরেছেন।
মেলায় প্রায় ৭৫ কেজি ওজনের একটি বাঘাআইড় মাছের দাম হাকানো হয় দেড়লাখ টাকা। বাহুবল উপজেলার আব্দুল খালেক নামে এক মাছ বিক্রেতা মাছটি আনেন মেলায়। ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাকানো হয় দাম।
শুধু এই বাঘাইড়টিই নয়। সরেজমিনে মেলায় ঘুরে আরো ১০/১২টি বাঘাআইড় মাছ দেখা যায়। ৩০ থেকে ৪০ কেজি ওজনের এ সব মাছেরও দাম হাকা হয় ৫০ হাজার টাকার উপরে। মেলায় ২০ কেজি ওজনের একটি ঘাগট মাছের দাম হাকা হয় ৬৫ হাজার টাকা। ২০/২৫ হাজার টাকার বড় বোয়াল ও ১০/১৫ হাজার টাকা মূল্যের বেশ কিছু চিতল মাছও উঠে মেলায়। একটি বড় রুই মাছের দাম হাকানো হয় ৩০ হাজার টাকা।
অন্যবারের মতো এবারও মেলার আকর্ষণ ছিল নদীতে ধরা বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ। নদীর বাঘাআইড়, বোয়াল, আইড়, পাঙাশ, চিতল, কাতলা, রুই, সিলভার কার্পসহ নানান পদের বড় বড় মাছ। এছাড়াও পুটি, চিংড়ি, কৈ, চাপিলা, চান্দা মাছ উঠে ব্যাপক হারে। 
মেলার প্রধান আকর্ষণ মাছ হলেও এতে কৃষি উপকরণ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, ভোগপণ্য, আখ, শিশুদের খেলনার দোকানও ছিল উল্লেখযোগ্য। এ মেলা দেখার জন্য শুধু হবিগঞ্জ নয়, সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়াসহ অন্যান্য জেলা থেকেও প্রচুর লোক আসে মেলায়।
মাছের দাম হাকানো ও কেনার পাশাপাশি আবার কেউ কেউ সেলফি তুলতেও ব্যস্ত ছিল। হবিগঞ্জ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা দলবেধে মেলায় গিয়েছিল মাছ দেখতে। ওই বিশ^বিদ্যালয়ের প্রভাষক ইফতেকার আহমেদ ফাগুন বলেন, এই মেলায় আসতে পেরে ছাত্রছাত্রীরা আনন্দিত। 
মাছ বিক্রেতা শরীফ উদ্দিন জানান, বিভিন্ন নদী ও হাওর থেকে মাছ আসে এখানে। এ মেলাকে লক্ষ্য করে চলে মাছ ধরার উৎসব। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিবছরই এ মেলায় মাছ নিয়ে আসি। বাজারের তুলনায় মেলায় মাছের দাম বেশি হলেও সবাই আনন্দের সঙ্গে মাছ কেনেন।’
পইল গ্রামের বাসিন্দা সাবেক চেয়ারম্যান সাহেব আলী জানান, মেলায় প্রতি বছরই  বাঘাআইড় মাছ ৫০ হাজার থেকে লাখ টাকার উপরে বিক্রি হয়। এ বছর বড় বড় বাঘাআইড় ও বোয়াল মাছ উঠেছে মেলায়। একেকটি মাছের ওজন ছিল ৩০ থেকে ৪০কেজি।
পইল মাছ মেলার ঐতিহ্য সম্পর্কে পইল ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মঈনুল হক আরিফ জানান, ‘ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা বিপিন চন্দ্র পালের জন্মভূমি পইল গ্রামে প্রতিবছর এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মেলাকে সামনে রেখে চাষীরা সারা বছর বড় মাছ সংরক্ষণ করেন। এ ধরনের মাছের মেলা জেলার আর কোথাও নেই।’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat