দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা। সরকার পতনের পর আবারও জোটসঙ্গীদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলটি।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গুলশান বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও লিয়াজোঁ কমটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
এদিন প্রথম ধাপে ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে এ বৈঠক হয়। এ সময় ছিলেন দলটির চেয়ারম্যান মো. আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১২ সদস্যদের প্রতিনিধি দল। এরপর বৈঠক হয় বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে। দলটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বাবুল সরদার চাখারীর নেতৃত্বে ১২ সদস্যদের প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়। উভয় বৈঠকে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি ও দলটির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু অংশ নেন।
বৈঠক শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর আমরা প্রথমবার মিলিত হয়েছি। আমাদের যুগপতের যে ঐক্যটা, সেই ঐক্যটা আমরা অটুট রাখছি। কারণ দেশের বর্তমান প্রেক্ষপটে এখানে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্র করে বিভিন্ন গার্মেন্টস ও ওষুধ ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ করে দেয়ার জন্য অনেক কর্মকাণ্ড চলছে। পিছনে কারা আছে, তা আমরা সবাই জানি।
এগুলো করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। তবে দেশকে স্থিতিশীল রাখতে হবে। দেশকে বড় ধরনের পরিবর্তনের জন্য নতুন বাংলাদেশ গড়ায় যে প্রত্যয় বর্তমান সরকারের, সেটার জন্য আমরা সকলে কাজ করছি। আমরা সরকারকে সঙ্গে সহযোগিতা করছি।
তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের সময় আমরা যে ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি- আমরা সবাই মিলে রাষ্ট্র মেরামতের প্রস্তাব দিয়েছি, এগুলো বাস্তবায়নে আমরা জনগণের কাছে তুলে ধরবো। কারণ এই সংস্কারগুলো জাতির আজকে প্রত্যাশা। এই নতুন বাংলাদেশে আমরা যে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছি, সেই বিষয়গুলো আমরা সবাই মিলে তুলে ধরবো। এগুলো আমরা আগামীতে বাস্তবায়ন করব, ইনশাআল্লাহ। যদি ৩১ দফাতে আরও কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন হয়, সেটাও করা হবে। জনগণ যদি মনে করে আরও কিছু পরিবর্তন করার প্রয়োজন আছে, এর সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রয়োজন আছে- সেটার জন্য আমরা খোলা মনে জনগণের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করব। আরও অন্তর্ভূক্ত করার চিন্ত আছে। আর এটা করতে হবে জাতীয় ঐক্যের মধ্যে দিয়ে। এটা কোন একটা দল করতে পারবে না।
গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, আজকে আমাদের সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। ৩১ দফা আমাদের সকলের মতামত। জাতীয় প্রয়োজনে পরিবর্তন করা যাবে। আর আজকে যে সরকার ক্ষমতায় আছে তাদের কঠিন দায়িত্ব রয়েছে, তাদের অনেক সংশোধনী আনতে হবে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া বিএনপি-জামায়াতের মধ্যেকার বৈরী সম্পর্কের বিষয়টিও বিএনপির কাছে জানতে চান যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীরা।