তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান মঙ্গলবার রাতে দোহায় যাচ্ছেন। আঙ্কারা কাতারের ব্যবহৃত কিছু ইউরোফাইটার টাইফুন জেট কিনতে চাইছে। তুরস্কের একটি নিরাপত্তা সূত্র এএফপি’কে এ কথা জানিয়েছে।
ইস্তাম্বুল থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এরদোয়ান কুয়েত থেকে উড়ে এসে বুধবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সাথে দেখা করার কথা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র এএফপি’কে জানিয়েছে, ‘তুরস্ক কাতারের ব্যবহৃত কিছু ইউরোফাইটার কেনার জন্য আলোচনার চেষ্টা করছে।’
সূত্রটি আরও জানায়, ‘বিনিময়ে, তুরস্ক সম্ভাব্য প্রযুক্তি হস্তান্তর ব্যবস্থার অংশ হিসেবে তার নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমান, কান ব্যবহারের সুযোগ দিবে।’
এখনও পর্যন্ত ‘কোনও সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি’ হয়নি এবং আলোচনা এখনও চলছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
তুরস্ক তার বিমান বাহিনীকে আধুনিকীকরণ করতে চায় এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জার্মানি, ব্রিটেন, স্পেন এবং ইতালির চার-জাতির কনসোর্টিয়াম দ্বারা নির্মিত ৪০টি নতুন ইউরোফাইটার টাইফুন কেনার চেষ্টা করেছে।
তুরস্কের এস-৪০০ রাশিয়ান ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কারণে ২০১৯ সালে ওয়াশিংটন আঙ্কারাকে তার এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়ার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এই ক্রয়টি ন্যাটোর প্রধান প্রতিপক্ষকে পশ্চিমা জেট অভিযানে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
‘কৌশলগত ধোঁকাবাজি’
কিছু প্রতিরক্ষা পর্যবেক্ষক ইউরোফাইটার অধিগ্রহণের জন্য তুরস্কের প্রচেষ্টাকে একটি কৌশলগত ধোঁকাবাজি হিসেবে দেখছেন। যার লক্ষ্য ওয়াশিংটনের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাতে আঙ্কারাকে তার যুদ্ধবিমান কর্মসূচিতে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
তুর্কি সূত্রটি জানিয়েছে, ‘তুরস্কের জন্য প্রধান অগ্রাধিকার এফ-১৬ এবং এফ-৩৫ কর্মসূচিই রয়ে গেছে’।
মে মাসে এরদোয়ান আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছিলেন, নিষেধাজ্ঞাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে এবং গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে তার বৈঠক সেই আশা আরও দৃঢ় করে তুলেছে।
জুন মাসে ওয়াশিংটনে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক বলেছেন, বছরের শেষ নাগাদ মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু তুর্কি সূত্রটি জানিয়েছে, এতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে।
বেশ কয়েকটি প্রতিরক্ষা সংবাদমাধ্যমের মতে, ‘মার্কিন কংগ্রেসে বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে নতুন বছরের আগে এই চুক্তিগুলোর অগ্রগতি অসম্ভব।’
২০১৭ সালে কাতার ২৪টি ইউরোফাইটার জেটের অর্ডার দিয়েছিল এবং ডিসেম্বরে দোহা জানিয়েছে, তারা আরও ১২টি ইউরোফাইটার জেট কিনতে চাইছে।
তুর্কি সূত্রের মতে, গত মাসে আমিরাতে হামাস নেতাদের ওপর ইসরাইলি হামলার পর কাতারের নিজস্ব প্রতিরক্ষা প্রয়োজনীয়তার আলোকে আঙ্কারার অনুরোধটি হালকাভাবে গ্রহণ করা হতে পারে।