- প্রকাশিত : ২০১৮-০৫-৩১
- ৪৪৭ বার পঠিত
-
নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌদি থেকে নারীদের ফেরত আনার আহ্বান
নিজস্ব প্রতিনিধি:- সৌদিতে কাজ করতে যাওয়া বাংলাদেশি নারীদের ফেরত আনার আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি ফেরত নির্যাতিত নারীরা।
তারা বলেন, সৌদিতে কাজ করতে যাওয়া অনেক নারী সমস্যায় আছে। তাদের ফেরত আনার ব্যবস্থা করেন। সেখানে নারীদের ওপর কী ধরনের নির্যাতন হয় তা শুধু যে গেছে সেই বলতে পারবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেশন (বিসিএসএম) আয়োজিত সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মীর ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মলনে এ কথা বলেন তারা। এ সময় সৌদি ফেরত শতাধিক নারী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতিতরা সৌদি আরবে কাজ করতে যাওয়ার পর নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ঠিকমতো খাবার পাওয়া যায় না। কিন্তু কাজ করতে হয় ৬টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত। এক হাজার রিয়াল বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও কোনো বেতন দেওয়া হয় না। মালিকের কাছে টাকা চাইলেই মারধর করে। দেশে ফিরে আসার কথা বললে টাকা চায়। বলে তোদের টাকা দিয়ে কিনে এনেছি। টাকা ফেরত দে নইলে দেশে যেতে পারবি না।
এ সময় বিসিএসএম এর পক্ষ থেকে একটি লিখিত বিবৃতি দেওয়া হয়। বিবৃতিতে জানান হয়, ভাগ্য বদলাতে নারীরা বিদেশে যাচ্ছেন একটু সুখের আশায়। সেখানে তাদের কপালে জুটছে ভয়াবহ শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতন। সৌদি আরব থেকে নির্যাতিত হয়ে দেশে ফেরা এই নারীদের সংখ্যা বাড়ছেই। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত নির্যাতিত হয়ে প্রায় হাজার খানেক নারী গৃহকর্মী দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার অপেক্ষায় সেখানে সেফ হাউজ ও বিভিন্ন জেলে আছেন আরো অনেকে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দেশে ফিরে আসা নারী কর্মীরা তাদের ওপর নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা দিচ্ছেন। তাতে অধিক সময় ধরে কাজ করানো, সময় মতো ঘুমাতে না দেওয়া, ঠিক মতো খাবার না দেওয়া, মাস শেষে নির্ধারিত বেতন না দেওয়া, গৃহকর্তা এবং বাড়ির অন্যদের দ্বারা ভয়াবহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ যৌন নির্যাতনের ফলে গর্ভবতী হয়ে দেশে ফেরত আসার মতো ঘটনাও ঘটছে।
ফেরত আসা নারীরা জানিয়েছেন, প্রতিবাদ করলে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটে। গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মাথায় গরম পানি ঢেলে দেওয়া হয়। চুল টেনে তুলে ফেলা হয়। গরম আয়রন মেশিন দিয়ে শরীরে ছ্যাকা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে কয়েকটি সুপারিশও তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলো হলো-সৌদি আরবসহ বিদেশে কাজ করতে যাওয়া প্রতিটি নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সরকারকে ফেরত আসা গৃহশ্রমিকের ক্ষতিপূরণ। স্বাস্থ্যসেবা ও প্রাপ্য মজুরি নিশ্চিত করা। গৃহকর্তা বা গন্তব্য দেশের এজেন্সি কর্তৃক নারী শ্রমিক ও তার শিশুর সম্পূর্ণ দায়িত্ব বহন করা। দোষী গৃহকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবার জন্য দূতাবাসের কার্যকরি ভূমিকা পালন করা। প্রাক বহির্গমন প্রশিক্ষণ আরো উন্নত করা।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্স ইউনিট (রামরুর) প্রোগ্রাম পরিচালক মেরিনা সুলতানা, ব্র্যাকের শরীফুল হাসান, ওকাবের ওমর ফারুক চৌধুরী, সৈয়দ সাইফুল হক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক রীনা রায় প্রমুখ।
নিউজটি শেয়ার করুন
এ জাতীয় আরো খবর..