- প্রকাশিত : ২০১৮-০৫-২১
- ৫৮৩ বার পঠিত
-
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজীবের দুই ভাইকে ক্ষতিপূরণে আপিলের আদেশ কাল
নিজস্ব প্রতিনিধি:- রাজধানীতে দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানোর পর মারা যাওয়া তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হাসানের দুই ভাইকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিলের রায় আগামীকাল মঙ্গলবার দেয়া হবে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ সোমবার পৃথক দুই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের যে আদেশ হাইকোর্ট দিয়েছিল তার বিরুদ্ধে আপিল করেন বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহন বাস দুটির কর্তৃপক্ষ।
সোমবার আদালতে বিআরটিসির পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন এ বি এম বায়েজিদ ও মুনীরুজ্জামান। স্বজন পরিবহনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু ও পঙ্কজ কুন্ডু। রিট আবেদনকারী আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল নিজেই শুনানিতে অংশ নেন।
গত ৮ মে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন। ক্ষতিপূরণ হিসেবে রাজীবের পরিবারকে এই টাকা পরিশোধ করবে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি ও বেসরকারি পরিবহন কোম্পানি স্বজন পরিবহন। আগামী এক মাসের মধ্যে অর্ধেক টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয় আদালত।
গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ানবাজার এলাকায় বেপরোয়া প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয় স্বজন পরিবহন ও বিআরটিসির একটি বাস। এ সময় বিআরটিসি বাসে থাকা তিতুমীর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হাসানের হাত কাটা পড়ে স্বজন পরিবহনের বাসের চাপায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজীব।
দুর্ঘটনার পর ৪ এপ্রিল রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। রাজীবের চিকিৎসার খরচ স্বজন পরিবহন মালিক ও বিআরটিসিকে বহনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক কোটি টাকা দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
রাজীবের মারা যাওয়ার তথ্য হাইকোর্টকে জানান ওই আইনজীবী। পরে আদালত বলেন, রাজীবের মৃত্যুতে পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে আমরা মর্মাহত। টাকা দিয়ে তো জীবনের মূল্য হয় না। কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বললেওতো আর জীবন ফিরে পাওয়া যাবে না। তবে পরিবারের বিষয়টি দেখতে হবে। পরে আদালত ৮ মে ক্ষতিপূরণের আদেশ দেয়। সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে বাস দুটির কর্তৃপক্ষ।
রাজীবের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার টাইপ করে তিনি নিজের এবং ছোট দুই ভাইয়ের খরচ চালাতেন। ছোট দুই ভাই মেহেদি ও আবদুল্লাহ তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় সপ্তম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে।
রাজীবের মৃত্যুর পর তার দুই ভাইকে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে চলচ্চিত্র নায়ক ও নির্মাতা অনন্ত জলিল ফেসবুকে দুই কিশোরের দায়িত্ব নেয়ার আগ্রহের কথা জানান। তবে তার কাছ থেকে আশানুরূপ সহযোগিতা মিলেনি বলে জানিয়েছেন রাজীবের খালা।
গত ১৮ এপ্রিল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জানান, রাজীবের দুই ভাই যতদূর পড়তে চায়, সে ব্যবস্থা তারা করে দেবেন। পড়াশোনা শেষে চাকরির ব্যবস্থাও তারা করবেন। অবশ্য রাজীবের খালা জাহানারা বেগম তার দুই ভাগ্নেকে সরকারি তত্ত্বাবধানে পড়াশোনা করাতে চান না। যদিও তারা আর্থিক সহযোগিতা নিয়েছেন।
নিউজটি শেয়ার করুন
এ জাতীয় আরো খবর..