- প্রকাশিত : ২০১৮-০৫-২৯
- ৪২৯ বার পঠিত
-
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদের ছুটির আগেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ
ঈদের ছুটির আগে ১৪ জুনের মধ্যে শিল্প কল-কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক কোর কমিটির সভায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের তিনি এ নির্দেশ দেন।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘১০ জুনের মধ্যে মে মাসের বেতন পরিশোধ করতে হবে। ঈদের আগে পর্যায়ক্রমে পোশাক শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হবে। আর ছুটির আগে বা ১৪ জুনের মধ্যে অবশ্যই উৎসব ভাতা পরিশোধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী ঈদ যেন শ্রমিকরা আনন্দঘন পরিবেশে করতে পারে সেজন্য আমরা বিভিন্ন শিল্প সেক্টরের মালিক সমিতির সদস্যদের বলেছি, মে মাসের বেতনটা যাতে ঠিকভাবে দিয়ে দেন, কোনো ল্যাকিংস না থাকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিটিং করে অঞ্চলভিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন। যে অঞ্চলে আগে ছুটি দেওয়া হবে, সেই অঞ্চলে যাতে আগেই উৎসব ভাতা দেওয়া হয়।’
‘বৈঠকে শ্রমিকদের পক্ষে অনেকেই দাবি করেছেন, ঈদের আগে জুন মাসের বেতনের একটা অংশও যাতে দেওয়া হয়। সাধারণত মাস শেষ হলে বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকরা যেহেতু ঈদের আগে কেউ ১০, কেউ ১২, কেউ ১৪ তারিখ পর্যন্ত কাজ করবেন, সেখানে ওই সময়ে আলাদা করে বেতন দেওয়া তো সম্ভব নয়। এটা ওপেন রেখেছি, মালিক পক্ষে যদি সম্ভব হয় ৫-১০ দিনের বেতন দেবেন। তবে জুন মাসের এই কিছু অংশ বেতন পরিশোধে বাধ্যবাধকতা নেই। এটা কিন্তু আইনেও কাভার করে না। আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেওয়া যায় কি না অনুরোধ করেছি’, বলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।
একসঙ্গে ছুটি না দিয়ে অঞ্চলভিত্তিক সুবিধামতো সময়ে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, জানিয়ে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঈদের সময় একসঙ্গে সবাই বাড়ি গেলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাড়তি চাপ পড়ে। অঞ্চলভিত্তিক যাতে শিল্প মালিকেরা শ্রমিকদের ছুটির ব্যবস্থা করে। যে অঞ্চলে আগে ছুটি দেবে সে অঞ্চলে আগেই বেতন-ভাতা দিয়ে দেবেন। তবে অবশ্যই ঈদের আগে ১৪ জুনের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে মালিকদের বলেছি।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় শিল্প কারখানার শ্রমিকদেরও সময়মতো বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব যেন সময়মতো শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করে দেয়। যাতে ওই সমস্ত কারখানার শ্রমিকেরা আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারেন।
শ্রমিকরা স্বাচ্ছন্দ্যে নিরাপদে যাতে বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য হাইওয়ে পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে, জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঈদের ছুটিতে ভাঙাচোড়া গাড়ি ও ট্রাকে বাড়ি ফেরার সময় অনেক শ্রমিক মারা যায়। আমরা হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের বলে দিয়েছি, যাতে তারা এটা খেয়াল রাখেন। যে যে মন্ত্রণালয়ের যেসব কাজ, সব কাজগুলো যাতে করা হয়।’
‘বেতন-ভাতা নিয়ে যাতে শ্রম অসন্তোষ না হয় সে দিকে আমাদের নজরদারি রয়েছে। ঝামেলা হতে পারে এমন শিল্প কারখানার তালিকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের দিয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী আপডেট। বেতন-ভাতা ও ঈদের ছুটি নিয়ে যাতে সমস্যা না হয় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি’, বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, একটা শিল্প সেক্টরে হাজার হাজার ফ্যাক্টরি, কিছুটা তো সমস্যা থাকতেই পারে। যার অবস্থা ভালো না এরকম মালিকের বউয়ের অলঙ্কার বিক্রি করে, ফ্যাক্টরির মেশিন বিক্রি করে, জায়গা বিক্রি করেও আমরা বেতনের ব্যবস্থা করেছি। এটা আমরা মনিটর করি, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ মনিটর করে।’
সভায় পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের সভাপতি রায় রমেশ চন্দ্র, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
নিউজটি শেয়ার করুন
এ জাতীয় আরো খবর..