আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বাণী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৩ জুন আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ২৩ জুন ২০১৯ আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত সকল কর্মচারীকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।
সরকারি সেবা অল্প খরচ ও স¦ল্প সময়ে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়াসহ দেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে সমুন্নত রাখতে সরকারি প্রশাসন অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে স¦চ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনবান্ধব ও সেবামুখী জনপ্রশাসন গড়ে তোলার জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সরকারি কাজে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে কার্যকর ডিজিটাল প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নয়ন কার্যক্রমকে টেকসই করার লক্ষ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে উন্নীত করা হবে। স¦াধীনতার ১০০ বছর পূর্তিতে ২০৭১-এ দেশকে সমৃদ্ধির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং সে লক্ষ্য অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের জনগণের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। তাঁরা জনগণের খাদেম, সেবক, ভাই। তাঁরা জনগণের বাপ, জনগণের ছেলে, জনগণের সন্তান। তাঁদের এই মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।’
প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ ও আন্তরিকতার সঙ্গে জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। এই সেবা উৎপাদন ও বিতরণে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষমতার ওপরই পাবলিক সার্ভিসের দক্ষতা ও কার্যকারিতা নির্ভরশীল। বর্তমান সরকার সরকারি কর্মচারীদের বেতন ১২৩ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। সকল পর্যায়ের সরকারি কর্মচারীদের পেশাদারিত্বের উৎকর্ষ লাভের লক্ষ্যে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, হংকং বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের সর্বসাধারণের সেবায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে হবে।
আমি আশা করি, বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও জাতির পিতার স¦প্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকল সরকারি কর্মচারী আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করবেন।
আমি ‘আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস ২০১৯’-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির বাণী
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ২৩ জুন আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস ২০১৯ উপলক্ষে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত সকল কর্মচারীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কর্মচারীদের কাজের স্বীকৃতি এবং পেশা হিসেবে পাবলিক সার্ভিসকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে ২০০৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস পালিত হয়ে আসছে।
সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াসহ সরকার গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের সুষ্ঠু বাস্তবায়নে দক্ষ, গতিশীল, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক জনপ্রশাসনের ভূমিকা অপরিহার্য। রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের পথ ধরে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। সরকার রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্র এবং স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তিতে দেশকে সমৃদ্ধির শিখরে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সৎ, দক্ষ, মেধাবী ও প্রতিশ্রুতিশীল সিভিল সার্ভেন্টদের মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি কর্মক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী শক্তির প্রয়োগ এবং নিত্যনতুন ধ্যান-ধারণার সঙ্গে পরিচিত হতে প্রজাতন্ত্রের সকল স্তরের কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য। সেই মোতাবেক জনগণের কাছে স্বল্প ব্যয়, অল্প সময় ও নির্বিঘেœ কাক্সিক্ষত সরকারি সেবা প্রদান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে হবে। আমি আশা করি, সরকারি কর্মচারীগণ পাবলিক সার্ভিসকে শুধু পেশা নয়, ব্রত হিসেবেও গ্রহণ করবেন। বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি কর্মচারীদের প্রতিনিয়ত জনগণের পরিবর্তিত চাহিদা ও সেবার ধরন অনুযায়ী হালনাগাদ থাকতে হবে। কেবল যুগোপযোগী, প্রযুক্তিনির্ভর ও পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এগিয়ে চলা জনপ্রশাসনই জনগণের কাক্সিক্ষত সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে সক্ষম। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম ও মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন - এ প্রত্যাশা করি।
আমি আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করছি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”