আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও প্রিন্টের গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করেছে। স্বচ্ছ ও নির্ভুলভাবে এই কাজটি সম্পন্ন করতে ভোটার এলাকা স্থানান্তর (মাইগ্রেশন) এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে নতুন ভোটার নিবন্ধন ও সংশোধনের আবেদন গ্রহণসহ অন্যান্য কাজ চলমান থাকবে। সংশোধনের আবেদন গ্রহণ করা হলেও এখন এর ফলাফল প্রদান করা হবে না।
ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এস এম হুমায়ুন কবীর জানান, নির্বাচন সামনে থাকায় এখন ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। তাই স্বচ্ছ ও নির্ভুলভাবে এই কাজটি সম্পন্ন করতে ভোটার এলাকা স্থানান্তর (মাইগ্রেশন) এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
তিনি আরও বলেন, ‘এই সময়ের মধ্যে আমরা সংশোধনের যেসব আবেদন পাবো, সেগুলো নিয়ম অনুযায়ী প্রসেস করবো। শুধু এখন ফলাফল দেওয়া হবে না। ভোটার তালিকার কাজ শেষ হলে তখন আমরা সব ফলাফল একসঙ্গে প্রকাশ করবো। আজ বিকেল ৪টার আগে যেগুলোর ফল প্রস্তুত হয়েছে, সেগুলো আবেদনকারীরা পেয়ে যাবেন।’
তিনি বলেন, ভোটার এলাকা স্থানান্তর বা মাইগ্রেশন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হবে। কারণ নির্বাচনকেন্দ্রিক তালিকায় কোনও ব্যক্তি যেন দুই জায়গায় ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না হন- এটা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য এই পর্যায়ে মাইগ্রেশন অনুমোদন দেওয়া হবে না। আগে থেকেই আবেদন করার সময়সীমা নির্ধারিত ছিল, এখন সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় নতুন কোনও মাইগ্রেশন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে না।
ভোটার তালিকা কবে চূড়ান্ত হবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
এ সময় তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ভোটার ঠিকানা পরিবর্তন বা মাইগ্রেশন কোনোভাবেই এখন অনুমতি দেওয়া হবে না। কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে মাইগ্রেশন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। তবে নতুন ভোটার নিবন্ধন, এনআইডি করার আবেদন, জন্মতারিখ বা ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের আবেদন গ্রহণ এবং সেগুলো যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলবে।
এর আগে ১৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে। এ তালিকা অনুযায়ী দেশে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ২৩৪ জন।
ইসি জানায়, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাদেরকেই নতুন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।