×
ব্রেকিং নিউজ :
দক্ষতার সাথে দ্রুত কাজ করার তাগিদ গণপূর্তমন্ত্রীর গোপালগঞ্জে মুকসুদপুরে অভিযোগ প্রতিকার বিষয়ক সমন্বয় সভা নড়াইলে দুস্থদের মাঝে বিনামূল্যে ছাগল বিতরণ বিলাইছড়িতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ পিরোজপুরে ঈদ-উল ফিতরে ৩ লক্ষ দরিদ্র মানুষ পাচ্ছে ৯০৯ মেট্রিক টন চাল প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসি এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হলেন সৈকত রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপনে বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রশংসায় ডোনাল্ড লু মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায় : ওবায়দুল কাদের
  • প্রকাশিত : ২০১৮-০৪-১৯
  • ৯০২ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
কিউবা বলতেই মনে আসবে ফিদেল কাস্ত্রোর কথা। আর ফিদেল বলতেই চলে আসে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী এক বিপ্লব। কিউবা, ফিদেল আর বিপ্লব যেন সমার্থক আর পরিপূরক। ফিদেল ছিলেন গোটা বিশ্বের বিপ্লবী মানুষের সঙ্গী, সহমর্মী। তার পরবর্তী ভাই রাউল কাস্ত্রো দেশটির হাল ধরেছিলেন। সেই কিউবায় হতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক পট পরিবর্তন। ছয় দশক পর দেশটিতে অবসান হচ্ছে কাস্ত্রো যুগের। ১৯৭১ সালে ফিদেল কাস্ত্রো কিউবার প্রধানমন্ত্রী। একই বছর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে (তৎকালীন বিশ্বে গেরিলা যুদ্ধে) অকুণ্ঠ সমর্থন দেন। ১৯৭৩ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আলজেরিয়ায় জোটবিরোধী সম্মেলনে যোগ দেন। একই সম্মেলনে অংশ নেন বিপ্লবে সরাসরি নেতৃত্ব দেয়া ফিদেল। সেখানে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার পর বিমুগ্ধ ফিদেল বলেন, ‘আমি হিমালয় দেখেনি। কিন্তু আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসে তিনি হিমালয়। আমিও তাদের মধ্যে একজন, যে এই হিমালয়কে দেখেছি।’ ২০০৮ সালে এই মহান বিপ্লবীর শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে দেশটির প্রেসিডেন্ট হন ছোট ভাই রাউল। ১০ বছর দায়িত্ব পালনের পর বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়ছেন তিনি। সমাজতান্ত্রিক দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল ডায়াজ। কাস্ত্রো পরিবারের ঘনিষ্ঠজন মিগুয়েল কিউবান তরুণদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। দীর্ঘ কয়েক দশকের পর কাস্ত্রো পরিবারের বাইরের কেউ দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। বিশ্ব রাজনীতির বিশ্লেষকদের আগ্রহ তবে কী ক্যাস্ত্রো যুগের অবসান ঘটছে কিউবায়? কিউবা বিখ্যাত বিপ্লবের জন্য। আর বিপ্লব বলতেই দেশটির প্রবাদপ্রতীম নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর মুখ ভেসে আসে প্রথমে। বিপ্লবের সতীর্থ বন্ধু চে গেভারাকে নিয়ে দেশে একচ্ছত্র সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। কয়েক দশকের শাসনে কিউবা আর ফিদেল হয়ে ওঠে সমার্থক। তার ছিল প্রভাববিস্তারি ব্যক্তিত্ব। যুক্তরাষ্ট্রের নাকের ডগায় ছোট্ট দেশ কিউবাতে তিনি সফল করেন এক বিরল বিপ্লব। তার মাত্র ১৮ বছরের মাথায় দেশটির একচ্ছত্র অধিপতি হন তিনি। ১৯৫৯ সালে বিপ্লব পরবর্তী দেশটির মাত্র ছয় মাসের জন্য প্রেসিডেন্ট ছিলেন ম্যানুয়েল উরুশিয়া। এরপর অসভাল্দো দরতিকোস ১৭ বছর এই পদে থাকেন। যদিও ক্ষমতার নাটাই কাস্ত্রো ভাইদের হাতেই। বিপ্লবের ১৮ বছরের মাথায় কিউবার প্রেসিডেন্ট হন ফিদেল। সেই ১৯৭৬ সাল থেকে ৩০ বছরের বেশি সময় দেশ শাসন করেন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট হন ছোট ভাই রাউল কাস্ত্রো। সেসময় রাউল ঘোষণা দেন ১০ বছরের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকবেন না। সেই কথা রেখেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে পদ ছাড়ছেন এই বিপ্লবী নেতা। কিউবার সর্বস্তরের মানুষ রাউলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। দেশটির নাগরিকরা মনে করছেন এই পরিবর্তন জরুরি ছিলো। বিশেষত গোটা বিশ্বব্যবস্থায় যখন দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। পাল্টে যাচ্ছে বৈশ্বিক রাজনীতি, অর্থনীতি, তথ্য প্রযুক্তি। গত এক দশকে সবই আমুল পাল্টে গেছে। টিকে থাকতে হলে দেশের নেতৃত্বেও যুগোপযোগী নেতৃত্বের প্রয়োজন। নিজে প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে অপেক্ষাকৃত তরুণ মিগুয়েলকে স্থলাভিষিক্ত করে রাউল যেন সেই পরিবর্তনকেই স্বাগত জানালেন কিউবায়। মিগুয়েল ডায়াজ বর্তমানে কিউবার ভাইস প্রেসিডেন্ট। দেশটির তরুণরা ৫৭ বছর বয়সী এই নেতাকে পছন্দও করেন। মাঠপর্যায়ের রাজনীতি থেকে উঠে আসা মিগুয়েল প্রথম আলোচনায় আসেন ২০০৩ সালে। সে বছর তিনি ভিলা ক্লারা প্রদেশের গভর্নর নির্বাচিত হন। তারপর শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। কিউবার সংখ্যাগরিষ্ঠ তরুণ ভোটাররা তাকে আধুনিক ও সময়োপযোগী নেতা বলে মনে করেন। ইতোমধ্যে চিন্তা-চেতনা আর কাজের ধরনে তিনি সেটা প্রমাণ করেছেন। কিউবানরা আশা করছেন, নতুন নেতা তাদের এক নতুন যুগের দিশা দেখাবেন। পূর্ববর্তী ফিদেল এবং রাউল কাস্ত্রোর সংস্কার কর্মসূচি মিগুয়েল অনুসরণ করবেন নাকি নিজেই নতুন সংস্কারের ডাক দেবেন সেটিই এখন জল্পনার। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর রাউল অবকাঠামো, বাণিজ্য, বিশ্ব কূটনীতির ওপর ব্যাপক সংস্কারে হাত দিয়েছিলেন। অসম্পূর্ণ এসব সংস্কার মিগুয়েলের হাতে কোন পরিণতি পায় সেটা দেখতে কিউবানদের পাশাপাশি বিশ্ববাসীকেও অপেক্ষা করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat