×
ব্রেকিং নিউজ :
বিএনপি যে কখন তাবিজ-দোয়ার ওপর ভর করে সেটিই প্রশ্ন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ২য় বৈঠক অনুষ্ঠিত ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে কৃষক অ্যাপ চালু করা হয়েছে : কৃষিমন্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজের ১ম ব্যাচে শতভাগ পাশ রুশ হামলার পর ইউক্রেনের খারখিভ এলাকা থেকে ৪ সহস্রা ধিক বাসিন্দা অপসারণ ফেনীতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৫০ জন সুনামগঞ্জে পান্ডারখাল বাঁধ নির্মাণের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন গণমাধ্যম কর্মী আইন নিয়ে সাংবাদিক সংগঠন ও অংশীজনদের মতামত নেয়া শুরু : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে মুখস্ত শিক্ষার ওপর নির্ভরতা কমাতে পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
  • প্রকাশিত : ২০১৭-০২-২৫
  • ৫৯২ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
আট বছরেও বিচার সম্পন্ন হয়নি,পিলখানা হত্যা মামলা
সিনিয়র সহঃসম্পাদক : আলহাজ্ব হুসাইন আলী রাজন:-পিলখানায় নারকীয় হত্যার ঘটনায় দায়ের করা হয় দুটি মামলা। এর মধ্যে সেনা কর্মকর্তাদের নিহতের ঘটনায় দণ্ডবিধি আইনে করা হয় হত্যা মামলা। অপরটি হয় বিস্ফোরক আইনে। দুটি মামলার মধ্যে ইতিমধ্যে হত্যা মামলাটি বিচারের একটি ধাপ পেরিয়েছে। কিন্তু বিস্ফোরক আইনের মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে। গত আট বছরেও এই মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন হয়নি। কবে বিচার কার্যক্রম শেষ হবে তা নিদিষ্ট করে বলতে পারছে না আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। মামলার বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়া প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ বাহারুল ইসলাম  বলেন, কারা অধিদফতরের মাঠে স্থাপিত বিশেষ এজলাশে সপ্তাহে ১/২ দিন বিস্ফোরক আইনের মামলার বিচার কার্যক্রম চলে। ওই এজলাশে চলে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মামলা। এছাড়া একুশে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলা ও হাইকোর্টে পিলখানা হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি চলছে। এই মামলা দুটির শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে আমাদের অংশগ্রহণ করতে হয়। ফলে বিরতিহীনভাবে বিস্ফোরক আইনের মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে চলতি বছরের মধ্যে এই মামলার বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।আসামি পক্ষের অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম আমিনুল ইসলাম বলেন, পিলখানা হত্যা মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রপক্ষের তত্পরতা দেখা গিয়েছিলো। কিন্তু বিস্ফোরক আইনের মামলার ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। এছাড়া মামলার বিচার কার্যক্রম মুলতুবি করা হচ্ছে দীর্ঘ সময় দিয়ে। ফলে দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা চাই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি। দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণে হত্যা মামলায় যেসব আসামি খালাস পেয়েছিলো তারা এই মামলার আসামি হওয়ার কারণে কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না।২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে তত্কালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। এতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। পরবর্তীকালে মামলা দুটি স্থানান্তর হয় নিউমার্কেট থানায়। হত্যা মামলায় মোট আসামি ছিলো ৮৫০ জন। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ১৫২ বিডিআর জওয়ানকে মৃত্যুদন্ড, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২৬২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। আর খালাস পান ২৭৮ জন।পরে মৃত্যুদন্ডের এই রায় কার্যকরের জন্য তা ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। অন্যদিক নিন্ম আদালতে খালাসপ্রাপ্ত ৬৯ জন জওয়ানের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার। ইতিমধ্যে ৩৫৯ কার্যদিবসব্যাপী আপিলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক পাঠ করা হয়েছে ১২৪ কার্যদিবস। বাকি ২৩৫ কার্যদিবস রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষ যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাইকোর্ট উভয় পক্ষকে সকল আইনি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষ সময় আবেদন জানালে আদালত ২ এপ্রিল পর্যন্ত শুনানি মুলতুবি করে। এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম বলেন, আশা করি এ বছরের মধ্যেই মামলাটি নিষ্পত্তি হবে। মামলাটিতে অনেক আসামি থাকায় তাড়াহুড়ো করার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, একই সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে একজন আসামির মৃত্যুদণ্ড আবার অপর একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে বলে আসামি পক্ষ থেকে প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে। এতে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া আরো বেশ কিছু আইনগত বিষয় উঠে এসেছে। এ কারণেই এসব বিষয়ে আইনি ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য সময় প্রয়োজন। আদালত সময় মঞ্জুর করেছে।বিস্ফোরক আইনের মামলাঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বিস্ফোরক আইনের মামলাটি। এই মামলায় আসামি রয়েছেন ৮৩৪ জন। এর মধ্যে একজন সিভিলিয়ান, বাকি আসামিরা বিডিআরের জওয়ান। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তত্কালীন বিডিআর সদর দপ্তরের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনার পর পেরিয়ে গেছে আট বছর। এর মধ্যে আদালতে দাখিল করা হয়েছে মামলার অভিযোগপত্র। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। কিন্তু শেষ হয়নি মামলার বিচার কার্যক্রম। আইনজীবী সূত্র জানিয়েছে, এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রায় ১২ শত সাক্ষী রয়েছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ৩৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ৫ মার্চ পরবর্তী সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ বাহারুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলায় এক হাজারের ওপর সাক্ষী ছিলো। আমরা প্রায় ছয়শত সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছিলাম। এই মামলায়ও হয়ত দুই থেকে তিনশত সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হবে। এ কারণে হয়ত বিচার বিলম্বিত হবে না। তিনি বলেন, হত্যা মামলায় দেড়শত আসামি রয়েছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত। আছেন অসংখ্য যাবজ্জীবন ও বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্তরাও। ফলে গাজীপুরের কাশিমপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এসব দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আনা নেওয়ার ব্যাপারটিও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে তাদেরকে আদালতে আনা নেওয়ার জন্য ৫শত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন রাখতে হয়। এ কারণে আসামি হাজির করে বিরতিহীনভাবে মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম বলেন, মামলার বিচার দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে আসামিদেরকে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক থাকতে হচ্ছে। দ্রুত নিষ্পত্তি হলে আসামি, নিহতদের স্বজন ও দেশবাসী দ্রুত বিচার পাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat