×
ব্রেকিং নিউজ :
গণভোটের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সুযোগ নেই: নাহিদ ইসলাম নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে জামায়াত-এনসিপিসহ সকল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা নেত্রকোণায় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত বগুড়ায় প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্যের প্রদর্শনী সুনামগঞ্জে ‘ইসিএ’ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা চট্টগ্রামে নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন ৩৫৫ কোটি টাকা, সূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ভূমি সেবা সত্যিকারার্থে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে: ভূমি সচিব পুঁজিবাজারে অনিয়ম : সাবেক চেয়ারম্যানসহ দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মাদক থেকে দূরে থাকার আহ্বান জাবি ভিসির
  • প্রকাশিত : ২০১৮-১২-১৫
  • ৪২২ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
পরিবেশ দূষণ রোধে বরগুনার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সর্বাধুনিক ব্যবস্থা নিশ্চিত
নিউজ ডেস্ক:–দেশের বিদ্যুৎ খাতকে পূর্ণতা দিতে বরগুনার তালতলী উপজেলায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চীনের পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেডের সঙ্গে যৌথভাবে দেশীয় সংস্থা আইসোটেক নির্মাণ করছে ৩০৭ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষম কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান আইসোটেক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন কোম্পানির সঙ্গে ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চুক্তি স্বাক্ষর করে। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক এ প্রকল্প থেকে ২০২২ সাল নাগাদ খুব অল্প মূল্যে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে এখানকার উৎপাদিত বিদ্যুৎ। ২৫ বছর এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটি অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়াসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে দক্ষতার সঙ্গে কয়লা দিয়ে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। চুক্তি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পরিবেশের ক্ষতি না করে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালিত হবে বলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমূহ নিশ্চিত করেছে। বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোট নিশানবাড়িয়া গ্রামে নির্মিত হচ্ছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। বর্তমানে এ প্রকল্পের ভূমি উন্নয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে। নিশানবাড়ীয়া এলাকার বঙ্গোপসাগর ও পায়রা নদীর মোহনা থেকে বিশেষজ্ঞ পরামর্শে বিশেষ মানসম্মত বালু উত্তোলন করে প্রকল্পের জমি ভরাটের কাজ চলছে। আইসোটেক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঈনুল আলম জানিয়েছেন, “বরগুনার জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ি কাছাকাছি সৈকতের ১ দশমিক ২ কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালি উত্তোলনের ক্ষেত্রে পরিবেশের নিরাপত্তা জনিত বিধিনিষেধ ন্যূনতম এক কিলোমিটারের মধ্যে ধরা হয়ে থাকে। ফলে সৈকতের ক্ষতি হবার কোনো আশংকা বা সুযোগ নেই। বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান জানান, “বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের যে জমি আছে কিছু আইসোটেক ইলেট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেডকে লিজ দেয়া হয়েছে আর প্রকল্পের মধ্যে যে জমি পড়েছে তাও লিজ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। প্রকল্প এলাকায় যারা অবৈধভাবে পাউবোর জমি দখল করে আছে তাদের জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’ সরকারী বরাদ্দ ও অনুমোদন সাপেক্ষে পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো’র যে জায়গায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ি পুনর্বাসন কর্মসূচী প্রকল্পের পরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে বলে আইসোটেকের মিডিয়া অ্যাডভাইজার ফিরোজ চৌধুরি জানিয়েছেন। প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মো. শরীফ হোসাইন জানিয়েছেন, কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রধানত সালফার ডাই অক্সাাইড, নাইট্রোজেনের অক্সাইড সমূহের বাতাসে নিস্মরণ নিয়ন্ত্রণ, আভ্যন্তরীন সড়কের ক্ষতিকারক ধুলিকনা বাতাসে ছড়ানো নিয়ন্ত্রন, কয়লা ব্যবস্থাপনা এলাকা ও ছাইয়ের পুকুর এলাকা ইত্যাদির সঠিকমাত্রায় ব্যবস্থাপনা না হলে পরিবেশের ক্ষতি সাধন করে থাকে। তাই এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরীর সময়ে, সম্পন্ন হবার পরে, উৎপাদনের সময়ে যেন পরিবেশের কোন ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে মূল পরিকল্পনায় নানা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি সরলীকরণ করে জানিয়েছেন, কয়লা পরিবহনে কয়লার গুড়ো, বালুসহ সলিড ডাস্ট ব্যবস্থাপনার জন্য প্রকল্প এলাকার সকল রাস্তাঘাটা কংক্রিটের তৈরি হবে। ইলেকট্রো স্ট্যাটিক প্রিসিপিটেটর (ইএসপি) পদ্ধতিতে ‘ডাস্ট’ সংগ্রহে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও কর্মপদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। চিমনি দিয়ে যে ধোঁয়া ও ময়লা নির্গত হবে তা হবে সহনীয় মাত্রায় ও সালফার মুক্ত। বিশ্বব্যাংক এর সুপারিশ মোতাবেক আইএফসি ইএইচএস মানদন্ডে ফ্লু গ্যাস ডিসালফারাইজেশন সিস্টেম নির্মাণ করা হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বয়লারগুলো এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে তাতে সর্বনি¤œ পর্যায়ে নাইট্রোজেন অক্সাইড সমূহ পুড়বে। চিমনিগুলো আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে সর্বোচ্চ উচ্চতার করা হবে এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিত্যাক্ত পানিকে ট্রিটমেন্ট করে তা কেন্দ্রের বাইরে সরানো হবে। নদীও সাগরের নোনা পানিকে বিশুদ্ধ ও মিষ্টকরণ ‘প্লান্ট’ স্থাপন করা হবে। দূষন হ্রাসকরণ প্রক্রিয়াকে চলমান রাখার জন্য নিয়মিত মনিটরিং সেল সচল থাকবে। আইসোটেক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঈনুল আলম আরও জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রর জন্য ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে কেবল মাত্র ঘরই দেয়া হচ্ছে না। তাদের প্রশিক্ষিত করে কর্মসংস্থান দেয়া হবে। তাদের আবাসনে স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল, কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদিও নির্মাণ করা হবে। বৈদেশিক অর্থায়নে নির্মিত হওয়ায় এ প্রকল্পে নিয়ম-নীতির ব্যাত্যয় ঘটার কোন সুযোগ নেই। বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকে স্বাগত জানিয়ে তালতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ এমএ জব্বার জানিয়েছেন, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তালতলীসহ উপকূলীয় এলাকা উন্নয়নের শহরে পরিণত হবে। জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। বরগুনা জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেছেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাগরতীরবর্তী এলাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। এটি উৎপাদনে গেলে দেশের বিদ্যুৎ সংকট দূর করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। বরগুনা ১ আসনের সাংসদ অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বর্তমান সরকারের উন্নয়নের একটি অংশ। আইসোটেকের ৩০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে প্রশসানের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে।-বাসস

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat