×
ব্রেকিং নিউজ :
গণভোটের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সুযোগ নেই: নাহিদ ইসলাম নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে জামায়াত-এনসিপিসহ সকল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা নেত্রকোণায় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত বগুড়ায় প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্যের প্রদর্শনী সুনামগঞ্জে ‘ইসিএ’ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা চট্টগ্রামে নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন ৩৫৫ কোটি টাকা, সূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ভূমি সেবা সত্যিকারার্থে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে: ভূমি সচিব পুঁজিবাজারে অনিয়ম : সাবেক চেয়ারম্যানসহ দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মাদক থেকে দূরে থাকার আহ্বান জাবি ভিসির
  • প্রকাশিত : ২০১৮-১২-১৭
  • ৪৩৬ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে যা রয়েছে
নিউজ ডেস্ক:–আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে প্রতিহিংসার রাজনীতি দূরীকরণ, নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা ও বিকেন্দ্রীকরণ, দুর্নীতি দমন ও সুশাসনসহ ১৪টি বিষয়ে আমূল পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সোমবার হোটেল পূর্বাণী ইন্টারন্যাশনালে সংবাদ সম্মেলন ইশতেহারের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। ইশতেহার পড়ে শোনান নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। ১. প্রতিহিংসা বা জিঘাংসা নয়, জাতীয় ঐক্যই লক্ষ্য— গত ১০ বছরের মামলা, গুম, খুন, বিচারবর্হিভূত হত্যা তদন্তে শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী, আইনজীবীদের সমন্বয়ে সর্বদলীয় সত্যানুসন্ধান ও বিভেদ নিরসন কমিশন গঠন করা হবে। খোলামনে আলোচনা করে ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে সমাধান করা হবে। সকল জাতীয় বীরদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। একদলীয় শাসনের যাতে পুনঃজন্ম না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। ২. নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা— বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড ও গুম পুরোপুরি বন্ধ করা হবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করা হবে। রিমান্ডের নামে নির্যাতন বা সাদা পোশাকে গ্রেফতার বন্ধ করা হবে। সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে। ৩. ক্ষমতার ভারসাম্য— নির্বাচনকালীন সরকারের বিধান তৈরি ও নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দেয়া। সংসদে উচ্চকক্ষ তৈরি করা হবে। আলোচনার মাধ্যমে ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হবে। সংসদে বিরোধী দলকে গুরুত্ব দেয়া। দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারা যাবে না। সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে। প্রাদেশিক সরকার পরীক্ষার জন্য সর্বদলীয় জাতীয় কমিশন গঠন করা। ৪. ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ— উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব থাকবে নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের হাতে। জেলা পরিষদের সদস্যরা প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন। পৌর এলাকায় সিটি গভর্নমেন্ট চালু হবে। প্রশাসনিক কাঠামো প্রাদেশিক পর্যায়ে বিন্যস্ত করা হবে। ৫. দুর্নীতি দমন ও সুশাসন— বর্তমান সরকারের আমলের দুর্নীতির তদন্ত করে জড়িতদের বিচার করা হবে। ন্যায়পাল নিয়োগ করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া হবে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের গ্রেফতারে সরকারের অনুমতির বিধান বাতিল হবে। বর্তমান কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করা হবে না। ব্যাংকিং ও শেয়ারবাজারে লুটপাটে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে। ভিনদেশীয় সাংস্কৃতি আগ্রাসন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ৬. কর্মসংস্থান ও শিক্ষা— পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী ছাড়া সরকারি চাকরিতে প্রবেশের কোনো বয়সসীমা থাকবে না। বেকার ভাতা চালু করা হবে। সরকারি চাকরিতে অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী কোটা ছাড়া আর কারো জন্য কোটা থাকবে না। তিন বছরের মধ্যে সরকারি সব শূন্য পদ পূরণ করা হবে। ওয়ার্ক পারমিটবিহীন সকল বিদেশি নাগরিকের চাকরি বন্ধ করা হবে। মোবাইলে ইন্টারনেট খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যয় সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। মাদ্রাসা শিক্ষায় কারিগরি শিক্ষা দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থান করা হবে। ৭. স্বাস্থ্য— হাসপাতালগুলোর শয্যা বৃদ্ধি করা হবে এবং সকল জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হবে। ওষুধের অপপ্রয়োগ রোধে চিকিত্সকদের সকল ব্যবস্থাপত্র নিরীক্ষা এবং হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগীর মৃত্যুর খতিয়ান পরীক্ষা করে জানানো হবে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে ন্যায়পাল থাকবেন। ঔষধ ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার খরচ কমানো হবে। প্রবাসী কর্মীদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে দেশে আনা এবং বাড়িতে পৌছে দেয়া হবে। সকল নাগরিককে স্বাস্থ্য কার্ড দেয়া হবে। ৮. জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন— দুই বছরের মধ্যে গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি ১২ হাজার টাকা করা হবে। সকল খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং চালু করা হবে। স্বাস্থ্যবীমার মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রিমিয়াম দিয়ে সবাই স্বাস্থ্য সুবিধা পাবেন। কর্মজীবী নারীদের জন্য পর্যাপ্ত ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ও সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করা হবে। ভেজাল ও রাসায়নিকমুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা হবে। ৯. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি— প্রথম বছর বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে না। ১০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর মূল্য আগামী পাঁচ বছরে বাড়বে না। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ও সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বাণিজ্যিক দামের পরিবর্তে আবাসিক হারে হবে। ইশতেহারের শুরুতে বলা হয়, নির্বাচনে জিতে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দেশের সকল নাগরীকের কল্যাণে সরকার পরিচালনা করবে। এই পরিচালনার মূলনীতি হবে ঐক্যমত্য, সকলের অন্তর্ভুক্তি ও যে কোনো রকম প্রতিহিংসা থেকে মুক্ত থাকা। ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’ সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বর্ণিত এই নীতির ভিত্তিতে সরকার পরিচালনায় যাবতীয় পদক্ষেপের ভিত্তি হবে রাষ্ট্রের মালিকগণের মালিকানা সুদৃঢ় করা। ঐক্যফ্রন্টের লক্ষ্য তুলে ধরে ড. কামাল হোসেন বলেন, গত ১০ বছরে কল্পনাতীত স্বেচ্ছাচারিতা এবং পুলিশকে দলীয় ক্যাডার হিসেবে ব্যবহার করে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা, গুম, খুন মামলার ঘুষ বাণিজ্য ও বিচারবহির্ভূত হত্যার লক্ষ পরিবার ক্ষুব্ধ ও বিপর্যস্ত।এই সমস্যা সমাধান করে সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী, আইনজীবী সমন্বিত সর্বদলীয় সত্যানুসন্ধান ও বিভেদ নিরসন কমিশন গঠন করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অতীতের হয়রানি মামলা সুরাহার লক্ষ্যে খোলা মনে আলোচনা করে ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধন করা হবে। তিনি বলেন, সকল জাতীয় বীরদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অন্তর্ভুক্ত করে স্কুল, কলেজে পড়ানো হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করা হবে। এক দলীয় শাসনের যেন পুনঃজন্ম না ঘটে তা নিশ্চিত করা হবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষ্যে প্রচারপ্রচারণা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat