×
ব্রেকিং নিউজ :
চাঁদপুরের কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ২৮ জনের মনোনয়নপত্র জমা কক্সবাজার সৈকতে সার্ফিং প্রশিক্ষণ শুরু তাসকিন-সাইফুদ্দিনের বোলিং নৈপুণ্যে ১২৪ রানে অলআউট জিম্বাবুয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে গিয়ে বিএনপি নিজেরাই চাপে আছে:ওবায়দুল কাদের খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি দেশের ২৫ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল বন্ধ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ জাতির পিতার সমাধিতে পানি সম্পাদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের শ্রদ্ধা সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘নেসা সেন্টার’ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা আগামীকাল
  • প্রকাশিত : ২০১৮-০৪-১৭
  • ৭৯৮ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিনিধি:- সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা তিন নেতাকে যেভাবে গোয়েন্দারা তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সেটার কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না এবং তা হাইকোর্টের আদেশের বিরোধী বলে জনিয়েছেন একাধিক আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী। সাবেক একজন পুলিশ কর্মকর্তারাও জানান, পুলিশ সাদা পোশাক পরিহিত অবস্থায় কাউকে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে না। এ ব্যাপারে হাইকোর্টের সুস্পষ্ট আদেশও রয়েছে। আইন অনুযায়ী কাউকে তুলে নিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হয়। আর কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাকেও কারণ জানাতে হয়, তার আইনি সুবিধা নেয়ার অধিকার দিতে হয়, তার স্বজনদের জানানোর সুযোগ করে দিতে হয়। তবে নানা সময় সারা পোশাকে নাগরিকদের ধরে নেয়ার অভিযোগ উঠে। এদের মধ্যে বহুজন কখনও ফিরে আসেননি। আর পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নেয়ার অভিযোগ স্বীকারও করে না। বছর পাঁচেক আগে হঠাৎ নাগরিকদের সাদা পোশাকে তুলে নেয়ার প্রবণতার তৈরি হয়েছিল। তখন এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট একটি মামলা করে হাইকোর্টে। সেই মামলার একজন আইনজীবী ছিলেন দিলরুবা সরমীন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ যেভাবে তিন ছাত্রকে তুলে নিয়ে কথা বলেছে, এটা তারা পারে না। কারণ, হাইকোর্ট বলে দিয়েছে কোন প্রক্রিয়ায় কাউকে নিয়ে যেতে হবে। তার একটিও এখানে মানা হয়নি। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী কাউকে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলে ওই কর্মকর্তাদের তাদের পরিচয় বলতে হবে। কী কারণে ওই ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে সেই কারণও তাদেরকে বলতে হবে। নোটিশ করে তাদের সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তিন যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন, ফারুক হাসান এবং নুরুল ইসলাম নূরুকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নেয়। শুরুতে পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থা কেউই এই তিনজনকে তুলে নেয়ার অভিযোগ স্বীকার করেনি। কিন্তু পরে জানা যায় তাদেরকে মিণ্টু রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। ঘণ্টা খানেক সেখানে অবস্থান শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফেরেন কোটা আন্দোলনের তিন নেতা। তারা জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে তুলে নেয়ার পর গুলিস্তান এলাকায় তাদের চোখ বাঁধা হয়। এরপর যখন চোখ খোলা হয়, তখন তারা নিজেদের গোয়েন্দা কার্যালয়ে দেখেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘তাদের কিছু তথ্য সহযোগিতার জন্য আনা হয়েছিল। তারা চলে গেছে। তাদের কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছে। সেগুলোর বিষয়ে তাদের কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে। তাদের আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।’ সবার কাছ থেকেই তথ্য নেওয়া হবে বলেও জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। মানবাধিকার কর্মী এলিনা খান বলেন, পুলিশ কাউকে এভাবে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে না। ‘আমাদের আইনে তো রয়েছেই, হাইকোর্টের আদেশও রয়েছে কাউকে তুলে নিতে হলে প্রথমে তার পরিচয় প্রদর্শন করতে হবে। এরপর তাকে কী কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সেই কারণও তাকে বলা হবে। সবচেয়ে বড় কথা সাদা পোশাক পরিহিত অবস্থায় কাউকে তুলে নেওয়া যাবে না।’ জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূরুল হুদা বলেন, ‘কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিতে হলে অবশ্যই কিছু নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম না মেনে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নেওয়া ঠিক নয়।’ ‘তবে যেহেতু কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের নেওয়া হয়েছে। ওই সময়েতো কিছু ভায়েলেন্স হয়েছে, যেমন ভিসির (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের) বাড়ি ঘর ভাঙা হয়েছে সেই কানেকশনে নিলে তো নিতেই পারে।’ যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা অঞ্চলের সহকারী কমিশনার শামসুল আরেফিন বলেন, ‘এই ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। এখানে আমি মন্তব্য করি কীভাবে?’ পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে সন্ধ্যায় কথা বলেছি, আর কী বলব?’ সাদা পোশাকে আটকের বিষয়ে হাইকোর্টে ব্লাস্টেও হয়ে মামলা করা আইনজীবী দিলরুবা সরমিন বলেন, ‘এর আগেও এ রকম অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাদের। তারা এই ধরনের কাজ কখনও করতে পারে না। এতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তাদের বিশ্বাসযোগ্যতাও নষ্ট হয়েছে।’ পুলিশ এই ধরনের বেআইনি কাজ করে যেতে থাকলে অপরাধীরাও সুযোগ নিতে পারে বলে আশঙ্কা আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat