মাত্র ১৩ বছর বয়সে আয়ারল্যান্ড নারী দলে অভিষেক হয়েছিল গ্যাবি হলিস লুইসের। এখন তিনি দলটির অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে এসেছে আয়ারল্যান্ড। দাদা উইলিয়াম ইয়ান লুইস, বাবা ডেভিড অ্যালন লুইস ও বোন রবিন অ্যালানা লুইসের মতো তার গায়েও এখন আয়ারল্যান্ডের জার্সি।
গ্যাবির প্রেমিক আয়ারল্যান্ড পুরুষ দলের ক্রিকেটার হ্যারি টেক্টর। তাতে তার চারপাশে কেবল ক্রিকেটের গল্প। মাঠে নামার আগে এক সাক্ষাৎকারে আয়ারল্যান্ডের এই অধিনায়ক দৈনিক ইত্তেফাককে সেই গল্প শুনিয়েছেন। পাঠকদের জন্য সেটি তুলে ধরেছেন রায়হানুল সৈকত।
ক্রিকেটে আপনার যাত্রা শুরু হয়েছিল কীভাবে?
গ্যাবি: আমি ছোটবেলা থেকে বাবাকে দেখে শিখেছি। বাবা ডাবলিনের একটি ক্লাবে খেলতেন। আমার বোনও সেখানে খেলেছেন। আমার খেলা হয়নি। তবে ডাবলিনের সেই দিনগুলোই আমাকে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পেছনে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। ক্রিকেটের সঙ্গে বড় হওয়ার কারণে আমার মাথার মধ্যে ও শিরা-উপশিরায় এই খেলা প্রবেশ করেছে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে আমার অভিষেক হয়েছিল। সেটিও বাবার অনুপ্রেরণায়। সেখান থেকে এখনও চলছে।
আপনার দাদা আয়ারল্যান্ডের জার্সিতে খেলেছেন। তার সঙ্গে কোনো স্মৃতি রয়েছে?
গ্যাবি: আসলে দাদা যখন মারা গেছেন, তখন আমি খুবই ছোট ছিলাম। সে সময়ের কিছুই স্মৃতিতে নেই। আসলে মনে রাখার জন্য যথেষ্ট বড় ছিলাম না। তবে আমার বোনের সঙ্গে দাদার স্মৃতি রয়েছে। আর বাবার থেকে দাদার অনেক গল্প শুনেছি। সেগুলো থেকেই দাদার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। আর ক্রিকেট তখন আমার কাছে আরও আপন হয়ে উঠেছে।
আপনার বাবা আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক ছিলেন। এখন আপনি নারী দলের অধিনায়ক। নেতৃত্ব কী বাবার থেকেই শিখেছেন?
গ্যাবি: আমার বাবা আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন, অধিনায়কত্বও করেছেন। সে সময়কার সকল কিছুই বাবা আমাকে বলেছেন। ক্রিকেটীয় জ্ঞান ও দক্ষতা এভাবেই তৈরি হয়েছে আমার। আর এখন যে আমি অধিনায়ক, তার পেছনেও রয়েছেন তিনি। কীভাবে নেতৃত্ব দিতে হয়, কীভাবে প্রতিপক্ষকে থামাতে হয়, সেসব আমি তার থেকে পেয়েছি। আর এজন্য আমি নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাবাই আমার কোচ, তিনিই আমার শিক্ষক।
গেল আগস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেছেন। আবেগাপ্লæত হয়েছিলেন। সেই স্মৃতি কেমন ছিল?
গ্যাবি: শতরানের মাইলফলক ছুঁতে পেরে অনেক স্বস্তি পেয়েছিলাম। অনেক আবেগপ্রবণও হয়েছিলাম। এমন কিছু আমরা করতে পারি বলেই মানুষ ক্রিকেটকে ভালোবাসে। তাদের জন্য আরও কিছু করতে চাই।
আপনি ছাড়াও এই স্কোয়াডে রয়েছেন জেন ম্যাগুয়ার, এলিস টেক্টর। রয়েছেন কোচ অ্যাডমন্ড ক্রিস্টোফার জোয়েস। তাদের ভাই-বোনও আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন। কীভাবে দেখেন এই বিষয়টি?
গ্যাবি: আয়ারল্যান্ড খুব ছোট একটি দেশ। এখানে সাধারণত পরিবারের কল্যাণেই অনেকে ক্রিকেটার হয়ে ওঠেন। ভাই-বোন, বাবা, কিংবা মায়েরাও ক্রিকেট খেলেন, এই খেলার সঙ্গে জড়িত থাকেন। তাদের হাত ধরে পরবর্তী প্রজন্মও ক্রিকেটের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এ কারণে একই পরিবারের অনেকেই ক্রিকেটার হয়ে ওঠেন। এই কারণে নারীদের জন্যও ক্রিকেট খুব সহজ হয়ে গেছে।
পুরুষ দলের ক্রিকেটার হ্যারি টেক্টরের সঙ্গে আপনার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তাতে আপনার জগৎজুড়ে কেবলই ক্রিকেট। উপভোগ করেন কেমন?
গ্যাবি: হ্যাঁ, আমরা ভীষণ আনন্দে সময় অতিবাহিত করি। আমরা সাড়ে ৫ বছর ধরে এই সম্পর্কে রয়েছি। তার সঙ্গে বেশিরভাগ সময়ই ক্রিকেট নিয়ে আলাপ হয়। আর দুজন দুজনকে বোঝার চেষ্টা করি সবসময়। কিছু করলে অবশ্যই আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তারপরে সেটি করি। ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করতে করতেই আমরা সম্পর্কে জড়িয়েছি।