×
ব্রেকিং নিউজ :
খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি দেশের ২৫ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল বন্ধ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ জাতির পিতার সমাধিতে পানি সম্পাদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের শ্রদ্ধা সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘নেসা সেন্টার’ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা আগামীকাল ‘শান্তির সংস্কৃতি’ সংক্রান্ত বাংলাদেশের প্রস্তাব জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ ৪ জন আহত, ৭ বগি লাইনচ্যুত ওরাল ক্যান্সার সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে: মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ১২ মে
  • প্রকাশিত : ২০১৯-০২-০৪
  • ৬২১ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
বন্ধ্যাত্ব সমস্যা, সমাধানে করণীয়
স্বাস্হ্য ডেস্ক:-বন্ধ্যাত্ব বলতে ঠিক কী বোঝায়?  যদি আপনার বয়স ৩৫-এর কম হয় এবং টানা এক বছর ধরে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পরেও গর্ভবতী না হতে পারেন, তা হলে বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা শুরু করা উচিত। ‘‘কিন্তু বয়স ৩৫ পেরিয়ে যাওয়ার পর ছ’মাস অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেও গর্ভাধান না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এ কথা অস্বীকার করার জায়গা নেই যে মা হওয়ার আদর্শ বয়সসীমা হচ্ছে ২৩-৩০ বছর। তার পর ডিম্বাণুর মান পড়তে থাকে ক্রমশ। তাই যাঁরা কেরিয়ারিস্ট এবং নিজের পায়ে না দাঁড়িয়ে বিয়ে বা সন্তানের স্বপ্ন দেখেন না, তাঁদের ডিম্বাণু ফ্রিজ় করে রাখা উচিত। অল্প বয়সের সুস্থ, সবল ডিম্বাণু সংরক্ষিত থাকে, পরে ইচ্ছেমতো সেটা ব্যবহার করা যায়।’’ এন্ডোমেট্রিওসিস বন্ধ্যাত্বের নানা কারণ থাকে। কেবল নারী নয়, পুরুষেরও বন্ধ্যাত্ব থাকতে পারে। তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে কয়েকটি সমস্যা থাকলে ভবিষ্যতে বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কা তৈরি হয়। তার মধ্যে একেবারে প্রথমেই আসবে এন্ডোমেট্রিওসিস-এর নাম। কীভাবে বুঝবেন যে আপনার এন্ডোমেট্রিওসিস আছে? ‘‘প্রাথমিক সমস্যা হচ্ছে পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা। সাধারণত এঁদের খুব বেশি রক্তপাত হয়। ডাক্তারি পরিভাষায় ব্যাপারটাকে ‘প্রোগ্রেসিভলি ওয়ারসেনিং হেভি পেনফুল পিরিয়ড’ বলে। যৌন সম্পর্ক স্থাপনের সময়েও এঁরা অস্বস্তিতে ভোগেন। এন্ডোমেট্রিওসিস বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ হতে পারে।’’ তা ছাডাও এই অসহ্য ব্যথাটা মানুষকে শারীরিক ও মানসিকভাবে  কাবু করে ফেলে, পেশাদার জীবন তো বটেই, ব্যক্তিগত জীবনেও তার প্রভাব পড়ে। তার চেয়েও বড়ো সমস্যা হচ্ছে, যত দিন যায়, তত জটিলতা বাড়ে। ‘‘পেলভিক পেন আর ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জের সমস্যা থাকলেও কিন্তু সতর্ক হতে হবে, পরীক্ষা করে দেখতে হবে কোনও পেলভিক ইনফেকশন আছে কিনা। ঋতুস্রাবের সময় পেলভিক ও তলপেট অঞ্চলে যন্ত্রণা হলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এগুলি পেলভিক এন্ডোমেট্রিওসিসের লক্ষণ,’’ যোগ করছেন ডা. জ়োহা। বলাই বাহুল্য, এটিও বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ। এন্ডোমেট্রিওসিস ঠেকিয়ে রাখতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়? ১. জীবন থেকে প্লাস্টিক পুরোপুরি বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। বিশেষ করে টিফিন বাক্স, জলের বোতল, খাবার গরম করার পাত্র কোনওটাই যেন প্লাস্টিকের না হয়। প্লাস্টিকের সঙ্গে খাবারের, পানীয়ের বিক্রিয়া হয় এবং সেই কেমিক্যাল রিঅ্যাকশনের ফল ভোগ করে আপনার শরীর, এটা কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রকাশিত ও প্রমাণিত সত্য। ‘‘এমনকী খুব দামি বা ইম্পোর্টেড প্লাস্টিকের কন্টেনারও চলবে না। কাচের বোতলে পানি রাখুন, স্টিলের টিফিনবাক্স থেকে টিফিন খান,’’ ২. ফ্রোজ়েন বা প্রসেসড খাবার চলবে না। এতে যে ধরনের প্রিজ়ারভেটিভস বা রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়, তা থেকে এন্ডোমেট্রিওসিসের সমস্যা বাড়ে। ৩. সম্ভব হলে অরগ্যানিক ফল-সবজি খান। না পারলে বাজার থেকে কেনা কাঁচা আনাজ ও ফল-মূল ভালো করে ধুয়ে নিন পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের পানিতে। ৪. জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ারড, অর্থাৎ ল্যাবরেটরিতে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি তৈরি খাবারদাবার থেকে দূরে থাকুন। ৫. স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং পরিমিত এক্সারসাইজ়ের কিন্তু কোনও বিকল্প নেই। ‘‘শুনতে খুব ক্লিশে লাগবে হয়তো, কিন্তু এই দু’টি নিয়ম মেনে চললে অনেক সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়,’ ‘‘প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে অন্তত চার ঘণ্টা ব্যায়াম করলে বডি ফ্যাট পার্সেন্টেজ কম থাকে, তাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে ইস্ট্রোজেনের উৎপাদন।’’ ইস্ট্রোজেন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে এন্ডোমেট্রিওসিসও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পলিসিস্টিক ওভারি ‘‘পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যায় ভুগলে অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ব্রণ, বন্ধ্যাত্বের সমস্যা তো হয়ই, ভবিষ্যতে হাই কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিসে ভোগার আশঙ্কাও থাকে। এটি একেবারেই লাইফস্টাইল ডিসঅর্ডার, একটু সচেতন হলেই সমস্যাটা এড়ানো সম্ভব। যত শিগগির সম্ভব ওজন কমান।’’ কীভাবে বুঝবেন আপনার শরীরে কোনও সমস্যা আছে? সেটাও খুব কঠিন নয়। অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ, ক্লান্তিতে শরীর ভেঙে পড়া, তলপেটে ব্যথা বা ভারীভাব থাকলেই সতর্ক হোন। সমস্যা চলতে থাকলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। বেশিদিন যদি আপনার অতিরিক্ত রক্তপাত হয়, তা হলে কিন্তু অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে। আচমকা খিদেবোধ হারালে বা ওজন কমতে আরম্ভ করলেও সতর্ক হোন। স্ট্রেস, ধূমপান ও মদ্যপানের সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের সম্পর্ক আছে কী? ‘‘আছে। যে কোনও অ্যাডিকশন বা নেশার সঙ্গে আমাদের শরীর অভ্যস্ত হয়ে পড়লে তার একটা কুফল পড়েই। আধুনিক জীবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেয়েরা বাইরে বেরিয়েছেন, তাঁদের জীবনে স্ট্রেস বেড়েছে। ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁরাও ধূমপান ও মদ্যপান করছেন। আর এর ফলটা খুব খারাপ হচ্ছে,’’। মানসিক চাপ পুরুষ ও মহিলা দুই ক্ষেত্রেই বিরাট বড়ো ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। পুরুষদের স্পার্ম কাউন্ট কমতে আরম্ভ করে। শুক্রাণুর মানও পড়তে থাকে। মেয়েদের নানা রকম হরমোনের সমস্যায় পড়তে হয়। যৌন জীবনেও ছায়া ফেলে স্ট্রেসের ছাপ। একাধিক যৌনসঙ্গী থাকলে কি বন্ধ্যাত্বের সমস্যা হতে পারে? পারে। নিরাপদ ও দায়িত্বপূর্ণ যৌনতার অভ্যেস না থাকলে ভ্যাজাইনাল ও পেলভিক ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।,‘‘একাধিক যৌনসঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করলে সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ইনফেকশন বা STI হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ক্ল্যামাইডিয়া নামের একটি ব্যাকটেরিয়া থেকে পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজ়িজ় হতে পারে। তা থেকে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যার ফলে বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়।’’ পারসোনাল হাইজিন সম্পর্কে সচেতন হোন, সুস্থ-স্বাভাবিক যৌনতায় আস্থা রাখুন। তাতে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা এড়াতে পারবেন। ফাইব্রয়েডের সমস্যা ফাইব্রয়েড হল ইউটেরাসের সবচেয়ে ‘কমন’ টিউমার, সাধারণত সন্তান হয়নি যে সব মহিলার, তাঁদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। ‘‘ইউটেরাসের মাসল লেয়ার থেকে উৎপন্ন হয় এই ধরনের টিউমার, সিঙ্গল বা মাল্টিপল টিউমার হতে পারে। কখনও কখনও এটা ইউটেরাইন ক্যাভিটির মধ্যে থাকে, কখনও বাইরে বেরিয়ে আসে। সাধারণত এর ফলে প্রবল রক্তপাত হয় ঋতুস্রাবের সময়, কখনও কখনও পেটে ব্যথা থাকে। এর ফলে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।’’ প্রসঙ্গত, সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে, আমাদের দেশে মহিলাদের অ্যানিমিয়ায় ভোগার অন্যতম প্রধান কারণই হচ্ছে ফাইব্রয়েডজনিত রক্তপাত। সারা বিশ্বের নিরিখে দেখলে হিস্টেরেক্টমির মাধ্যমে ইউটেরাস বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রথম কারণ হচ্ছে ফাইব্রয়েড। তবে সাধারণত এই ধরনের টিউমার থেকে ক্যানসারের আশঙ্কা থাকে না। বন্ধ্যাত্বের আধুনিক চিকিৎসা সুখের বিষয় হচ্ছে, বন্ধ্যাত্বের অত্যাধুনিক চিকিৎসা বেরিয়ে গিয়েছে এবং তা ব্যবহার করে খুব ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণত দু’ ভাবে চিকিৎসা করা হয়, প্রথমত জোর দেওয়া হয় জীবনযাত্রার পরিবর্তনে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, খাওয়াদাওয়া করতে হবে পরিমিত মাত্রায়।  শারীরিক সুস্থতা নিয়ে কোনও সমস্যা না থাকলে সাধারণত গর্ভাধান সহজ হয়। যাঁরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে কাজ করেন, তাঁদের শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি দেখা দেয় এবং তা থেকে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা হতে পারে। প্রতিদিন খোলা হাওয়ায় খানিকটা সময় কাটানোর অভ্যেস করুন। এর কোনওটাতেই কাজ না হলে সাহায্য নেওয়া হয় ওষুধপত্র ও অ্যাসিসটেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজির। অনেক সময় বন্ধ্যাত্বের কোনও সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না, সেক্ষেত্রেও আইভিএফ ব্যবহার করা হয়। নারী বা পুরুষের বা দু’জনেরই সমস্যা থাকলে তো এই পদ্ধতি কাজে আসেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat