×
ব্রেকিং নিউজ :
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সরকারের লক্ষ্য : অর্থ প্রতিমন্ত্রী বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার ৭ জন কারাগারে জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বিসিবির প্রাথমিক দল ঘোষণা বান্দরবানের থানচি, রোমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাচন স্থগিত লেবাননে ইসরাইলি হামলায় ইরান সমর্থিত যোদ্ধা নিহত আগামীকাল ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী রাজস্ব আয় ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদের সকল উন্নয়নের পৃষ্ঠপোষক : স্পিকার স্থিতিশীল সরকার থাকায় দেশে উন্নয়ন হয়েছে : ওবায়দুল কাদের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস
  • প্রকাশিত : ২০১৮-০৪-১৯
  • ৯১৮ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে) জনসমুদ্রে দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বাঙালি জাতির  হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে যে ঐতিহাসিক মুহূর্তটি সবচেয়ে বড় অনুঘটকের কাজ করেছে, সেটি হলো ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সেই ভাষণ।মাত্র ১১৩৮ শব্দের একটি অলিখিত ভাষণ কীভাবে গোটা জাতিকে জাগিয়ে তোলে, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহিত করে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ তার অনন্য উদাহরণ। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সেই ভাষণের দিনটি এবার এসেছে ভিন্ন মহিমায়। ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পর এই প্রথম দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে বাংলাদেশে।  সুদীর্ঘ আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে সেদিন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমরা যখন মরতে শিখেছি; কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’ ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ পৃথিবীর কোনো ভাষণের সঙ্গে তুলনা হয় না।  ভাষণের বহুমাত্রিকতা ও বৈশিষ্ট্য ইতিহাসের নতুন উপাদান। আব্রাহাম লিঙ্কন, মার্টিন লুথার কিংয়ের ঐতিহাসিক ভাষণ ছিল লিখিত। আর বঙ্গবন্ধুরটি অলিখিত এবং তাৎক্ষণিক।  মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষণটি সেদিন মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনেছিল মানুষ। পেয়েছিল তাদের কাঙ্ক্ষিত সব দিকনির্দেশনা। বারুদের মতো জ্বলে উঠেছিল দেশ।  কবি নির্মলেন্দু গুণ তাঁর এই ভাষণকে একটি ‘মহাকাব্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, আর যিনি এই ভাষণ দিয়েছেন, তাঁকে বলেছেন ‘মহাকবি’।  আর ৭ মার্চের এই  ভাষণ বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ উইক পত্রিকা শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজনৈতিক কবি’ উপাধি দিয়েছিল। পাকিস্তানি শাসকরা ২৫ মার্চ রাতে যে হামলা চালিয়েছিল, সেটি চালানোর পরিকল্পনা ছিল ৭ মার্চে । তারা ঠিক করে রেখেছিল, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেই হামলা চালাবে, বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করা হবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু  তাদের চক্রান্ত সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। তাই ওই ভাষণে তিনি দক্ষতার সঙ্গে  প্রতিটি শব্দ চয়ন করেছেন, যাতে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী সেটিকে তাৎক্ষণিক স্বাধীনতার ঘোষণা বলে প্রমাণ করতে না পারে। কিন্তু কৌশলে এমনভাবে বললেন যেটি ছিল আসলে স্বাধীনতারই ঘোষণা। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ও মুক্তিযুদ্ধ একই সূত্রে গাঁথা।বাঙালির মুক্তির সনদ। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণের মাধ্যমে পুরো জাতি অনুপ্রাণিত হয়ে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সে দিন বঙ্গবন্ধুর সেই বজ্রকণ্ঠ ভাষণেই শুরু হয়ে যায় কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-জনতাসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রস্তুতি। ৩০ লাখ বাঙালির বুকের তাজা রক্তে, ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার যে বিজয় মুকুট পরেছে বাংলাদেশ- তার বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণেই। বস্তুতঃ বাঙালির সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির রূপরেখা এই ঐতিহাসিক ভাষণেই রয়েছে। কোটি প্রাণের আবেগকে একজন জননায়ক কীভাবে তার কণ্ঠে ধারণ করেন ৭ মার্চের ভাষণ তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। গত বছর ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষণটিকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটিই এমওডব্লিউতে সংরক্ষিত বাংলাদেশের প্রথম ঐতিহাসিক কোনো দলিল। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকেই স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। ৭ মার্চ বাঙালির স্বাধীনতার ইতিহাসে ও জাতীয় জীবনে এক সুদূরপ্রসারী গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করছে বলেই আমাদের বিশ্বাস। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ আমাদের ইতিহাস এবং জাতীয় জীবনের এক অপরিহার্য ও অনস্বীকার্য অধ্যায়; যার আবেদন চির অম্লান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat