×
ব্রেকিং নিউজ :
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের আমরা যেন ভুলে না যাই : নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে : জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার হবিগঞ্জে মা-মেয়ে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ওএমএস-এর আওতায় ৪৫ পয়েন্টে ভর্তুকি মূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রি হচ্ছে ‘অপশক্তির দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয়’ আমিরাতের শীর্ষ কোম্পানিসমূহ বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী : রাষ্ট্রদূত ভারত ঐতিহ্যগত ওষুধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে জ্ঞান বিনিময়ে আগ্রহী নদী বাঁচাতে আবরার ফাহাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের পথ নির্দেশ করবে : নাহিদ ইসলাম উল্লাপাড়ায় ইয়াবাসহ আটক ১
  • প্রকাশিত : ২০১৮-০৫-০৮
  • ৯৬৫ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিনিধি:- দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানোর পর মারা যাওয়া কলেজছাত্র রাজীব হাসানের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। স্বজন পরিবহন ও বিআরটিসি বাসকে এই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। রাজীবের পরিবার বলতে আছে  দুই ভাই। তারা দুজনই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। তাদেরকে এই ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী এক মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের অর্ধেক (৫০ লাখ) পরিশোধের আদেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ানবাজার এলাকায় বেপরোয়া প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয় স্বজন পরিবহন ও বিআরটিসির একটি বাস। এ সময় বিআরটিসি বাসে থাকা তিতুমির সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হাসানের হাত কাটা পড়ে স্বজন পরিবহনের বাসের চাপায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজীব। দুর্ঘটনার পর ৪ এপ্রিল রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। রাজীবের চিকিৎসার খরচ স্বজন পরিবহন মালিক ও বিআরটিসিকে বহনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।  একই সঙ্গে তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক কোটি টাকা দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। গতকাল সোমবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজীবের মারা যাওয়ার তথ্য হাইকোর্টকে জানান এই আইনজীবী। পরে আদালত বলেন, রাজীবের মৃত্যুতে পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে আমরা মর্মাহত। টাকা দিয়ে তো জীবনের মূল্য হয় না। কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বললেওতো আর জীবন ফিরে পাওয়া যাবে না। তবে পরিবারের বিষয়টি দেখতে হবে। পরে আদালত ক্ষতিপূরণের আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করে। আইনজীবী আদালতকে জানান, রাজীবের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার টাইপ করে তিনি নিজের এবং ছোট দুই ভাইয়ের খরচ চালাতেন। ছোট দুই ভাই মেহেদি ও আবদুল্লাহ তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় সপ্তম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। এ সময় আদালত বলেন, আমরা দুই ভাইয়ের জন্য ক্ষতিপূরণের আদেশ দেব। কিন্তু কার অনুকূলে দেব? আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস বলেন, তাদের মামা ও খালা আছে। এ পর্যায়ে আদালত রাজীবের খালাকে মঙ্গলবার হাজির হয়ে একটি আবেদন করতে বলেন। আজ রাজীবের খালা ও মামা আদালতে হাজির ছিলেন। সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের নজির আরও আছে এর আগে গত ডিসেম্বরে প্রায় সাত বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ নিহতের ঘটনায় তার পরিবারকে চার কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণের রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের এই রায়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার একটি পথ তৈরি হয়। ২০১১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদের নিহত হওয়ার ঘটনায় তার স্ত্রীর করা ক্ষতিপূরণ মামলায় গত বছরের ৩ ডিসেম্বর রায় দেয় উচ্চ আদালত। ওই দুর্ঘটনায় মাসুদের সঙ্গে নিহত চিত্রপরিচালক মিশুক মুনীরের পরিবারের পক্ষ থেকেও একটি ক্ষতিপূরণ মামলা করা হয়। তবে মামলাটির রায় এখনও হয়নি। দেশে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। কিন্তু তাদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ঘটনা বিরল। দুর্ঘটনা মামলায় দেশে তারেক মাসুদের রায়টিই সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার রায়। এর আগে ১৯৮৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন মন্টু নিহত হওয়ার ঘটনায় ২০১০ সালে দুই কোটি এক লাখ ৪৭ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলেও সর্বোচ্চ সাজার বিধান নেই কোনো আইনে। সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হলে মামলা করতে হয় দণ্ডবিধির ৩০৪(খ) ধারায়। এই ধারায় সর্বোচ্চ সাজা তিন বছরের কারাদণ্ড। সেন্টার ফর ইনজ্যুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৬৪ জন, বছরে ক্ষতি ৩৪ হাজার কোটি টাকা। জরিপে দেখা যায়, প্রতি বছর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ১৬৬ জন নিহত হয়। বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) এক জরিপে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ সালে দুই হাজার ৪৬৬ জন নারী ও শিশুসহ ১০ হাজার ২৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটে সড়ক দুর্ঘটনায়। এ সময় সংঘটিত সাত হাজার ৫৯০টি দুর্ঘটনায় আহত হয় অন্তত আরও ২২ হাজার ৫৯৮ জন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat