×
ব্রেকিং নিউজ :
শিগগিরই মাগুরায় রেললাইন চালু হবে : রেলমন্ত্রী কুকি-চিনের নারী শাখার সমন্বয়কসহ দুইজন বান্দরবানের কারাগারে সুনামগঞ্জে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন রাঙ্গামাটির লংগদুতে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত ২ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি সরকারের ধারাবাহিকতার জন্যই দেশে এতো উন্নয়ন হয়েছে : ওবায়দুল কাদের শুদ্ধাচার নিশ্চিতকরণ ছাড়া এসডিজি অর্জন সম্ভব নয় : চট্টগ্রামে টিআইবি কংগ্রেসম্যানদের সই জালকারী বিএনপি একটা জালিয়াত রাজনৈতিক দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যবসা সম্প্রসারণে ইএসজি কমপ্লায়েন্স রিপোটিং স্ট্যান্ডার্ড থাকা জরুরী সোনালী আঁশ পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী
  • প্রকাশিত : ২০২১-০৩-১৮
  • ৪২৫ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার সম্পর্কে জ্ঞানের সুযোগ সৃষ্টি করতে বিদেশী সাহিত্য অনুবাদে আরো বেশি মনোনিবেশ করার জন্য বাংলা একাডেমির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুবাদ সাহিত্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘নিজের মায়ের ভাষাকে জানা যেমন দরকার তেমনি অন্য ভাষা জানাটাও দরকার, সেজন্য অনুবাদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, বাংলা একাডেমিকে সবময়ই আমি অনুরোধ করেছি-অন্যান্য দেশের সাহিত্য যেন আমরা জানতে পারি। কারণ, সহিত্যের মধ্যদিয়েই মানুষের জীবনচর্চাটা জানা যায়, সংস্কৃতি ও ইতিহাস জানা যায়।’
তিনি বলেন, রাজনিতিকরা দিনভর বক্তৃতা করার পর সেখানে কিছুটা মন ছুঁয়ে গেলেও সাহিত্য মানুষের মধ্যে গভীর রেখাপাত করতে পারে। কাজেই, সাহিত্যের মাধ্যমে কোন বার্তা দেওয়া গেলে সেটা মানুষের মনে দীর্ঘ স্থায়িত্ব লাভ করে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে অমর একুশে উপলক্ষ্যে রাজধানীর বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে মাসব্যাপী অমর একুশের বইমেলার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি বাংলা একাডেমি চত্বরের মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সাহিত্যের মধ্যদিয়ে একটি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও জানার একটা সুযোগ হয়। মানুষের জীবন-মান ও জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানা যায় সেজন্য এটা খুব বেশি প্রয়োজন। তাছাড়া, সাহিতের মধ্যদিয়ে ইতিহাস-সংস্কৃতিসহ সববিছুই আমরা জানতে পারি। সে জন্য সবসময় ভাষার ওপর গবেষণা করা এবং অনুবাদ করা এবং এই জিনিসগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বই পড়া অভ্যাসকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকর জীবনে বই বড়ার অভ্যাস থাকলে সময় কাটাতেও কষ্ট হয় না। তাছাড়া, এখন মোবাইলসহ বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমেও পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে, একটা বই হাতে নিলে ও পাতা উল্টিয়ে পড়ার আনন্দটাই আলাদা। যেটা ডিজিটাল ডিভাইসে পাওয়া যায় না। কাজেই বইয়ের আবেদনটা কখনও মুছে যাবে না।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভব থাকলেও ঘুরে ঘুরে বই পড়ার বা বই নাড়াচারার যে আনন্দ সেটা যেন পাঠকরা পেতে পারেন সেজন্যই এই বই মেলার আয়োজন। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজি এবং সংস্কৃতি সচিব মো. বদরুল আরেফিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘আমার দেখা নয়া চীন’ গ্রন্থের ইংরেজী সংস্করণ (নিউ চায়না ১৯৫২) এর মোড়ক উন্মোচন করেন।
এবার কবিতায় মুহাম্মদ সামাদ, কথাসাহিত্যে ইমতিয়ার শামীম, প্রবন্ধ/গবেষণায় বেগম আকতার কামাল, অনুবাদে সুরেশরঞ্জন বসাক, নাটকে রবিউল আলম, শিশুসাহিত্যে আনজীর লিটন, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় সাহিদা বেগম, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞানে অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, আত্মজীবনীতে ফেরদৌসী মজুমদার এবং ফোকলোর বিভাগে মুহাম্মদ হাবিবুল্লা পাঠান বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২০ লাভ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা বাইমেলা ঘুরে দেখেন। এর কিছুক্ষণ পরই সাধারণ দর্শনার্থী, লেখক ও পাঠকদের জন্য বইমেলার দুয়ার খুলে দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে নতুন প্রজন্মকে বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতে পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘ছোটদের বইয়ের প্রতি ঝোঁক বাড়ানো দরকার। আমাদের সময় বাচ্চাদের বই পড়ে শোনানো হতো। এখনও আমরা তা করি। সব সময় ঘরে একটা ছোট লাইব্রেরি করে রাখি। বইয়ের প্রতি ঝোঁক বাড়াতে হবে। পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘সরকারে থাকি আর বিরোধীদলে থাকি একদিনের জন্য হলেও বইমেলায় যাই। এখন করোনার কারণে যেতে পারছি না। কারণ, আমি গেলে এক হাজার লোকের সম্পৃক্ততা হয়। তাদেরও সবার সংক্রমণের কথা চিন্তা করে আমি যাচ্ছি না। তবে, আমার মনটা পড়ে আছে সেখানে।’
এ সময় ভাষা দিবস ও ভাষা আন্দোলনের নানা ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানতে জানতে ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের নানা রিপোর্ট সাত খ-ে প্রকাশ করেছি (সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টালিজেন্স ব্র্রাঞ্চ অন ফাদার অব দি নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান)। এগুলো পড়লেই বোঝা যাবে বঙ্গবন্ধু কীভাবে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন, আন্দোলনের সমন্বয় করেছেন।
তিনি বলেন, এখন অনেকে প্রশ্ন তোলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন, উনি আবার কবে আন্দোলন করলেন?’ আমার কথা হলো আসলে উনি জেলে গেলেন কেন? ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তো তারই পরামর্শে হয়েছে। আর সেই আন্দোলন শুরু হলেই তো তিনি গ্রেফতার হন।’
স্বাস্থ্য সুরক্ষা মানার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস অনেক ক্ষতি করেছে। জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে গেছে। এটি কাটিয়ে উঠতে আমরা নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রণোদনা ঘোষণা করেছি, প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকেও সহযোগিতা করেছি। সমগ্র বাংলাদেশে ৭ হাজার ৫০০ শিল্পীকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। তাছাড়া, অন্যান্য শ্রেণি-পেশার লোকদেরও সহযোগিতা করেছি, কেউ বাদ যায়নি।’
করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ এবং অনেক দেশে তৃতীয় ওয়েভ শুরু হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘টিকা দিয়ে সুরক্ষিত মনে করবেন না। মাস্ক পরবেন, হাত ধোবেন ও দূরত্ব রক্ষার মাধ্যমে নিজেকে ও অন্যকে সুরক্ষিত রাখবেন। বইমেলায় যাবেন, বই ধরবেন। কিন্তু নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন।’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat