সরকার জঙ্গিবিরোধী কাউন্সেলিং প্রদানে উদ্যোগ নেবে : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি: –
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি এবং শিক্ষার্থীদের ধ্বংসের পথ পরিহারে অনুপ্রাণিত করতে কাউন্সেলিং প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিয়ের মাধ্যমে ময়মনসিংহ বিভাগের সকল শ্রেণি-পেশার জনগণের সঙ্গে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাউন্সিলিংয়ের জন্য আমরা হয়তো কিছু মানুষকে ট্রেনিং দিতে পারি, তারা কিভাবে এই কাউন্সিলিংটা করবেন। এ ব্যাপারেও আমরা উদ্যোগ নেবো। এখানে প্রতি স্কুলে মনোবিজ্ঞানী বা কাউন্সিলর দেয়ার একটা প্রস্তাব এসেছে। প্রতি স্কুলে হয়তো মনোবিজ্ঞানী কাউন্সিলর দেয়া সম্ভব নয়। তবে, আমরা ইতোমধ্যেই একটি উদ্যোগ নিয়েছি। আপনারা জানেন, আমি সূচনা ফাউন্ডেশন নামে একটি ফাউন্ডেশনও করেছি এবং সেখানে যারা এ ধরনের বিপথে যাচ্ছে বা যারা অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী রয়েছে সেখানে তাদের কিছু কাউন্সেলিং প্রদান করা হচ্ছে। আর সে কাউন্সেলিংয়ের জন্য আমরা হয়তো কিছু মানুষকে ট্রেনিং দিতে পারি, তারা কিভাবে এই কাউন্সেলিংটা করবেন। শুধু কাউকে কাউন্সেলিং দিলে হবে না, অভিভাবক-শিক্ষক তাদেরও এ সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। তাদেরও জানতে হবে। শিক্ষক এবং অভিভাবকদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের বিষয়েও আমরা উদ্যোগ নেবো। যাতে কেউ বিপথে গেলে তাদের যেন সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা যায়। এটি একটি ভালো প্রস্তাব কাজেই সব স্কুলে কাউন্সিলর দেয়া না গেলেও আমরা সকলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এ ধরনের একটা উদ্যোগ নিতে পারি।এ সময় গণভবন প্রান্তে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।
বিভাগের ৪ হাজার ১৯টি পয়েণ্টে সম্প্রচারের আয়োজন সম্বলিত এই ভিডিও কনফারেন্সে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ সম্পৃক্ত ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আপনাদের সামনে উপস্থিত হওয়ার একটাই কারণ, আমাদের সেটা হচ্ছে- একটা নতুন উপসর্গ দেখা দিয়েছে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস। যে করেই হোক এই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের হাত থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। এটা কখনো ইসলামের পথ না। ইসলাম জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস এবং নিরীহ মানুষ হত্যা করাকে কখনো সমর্থন করে না। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি কিছু লোকের অপকর্মের জন্য আমাদের শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম, ভাতৃত্বের ধর্ম ইসলামের বদনাম হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে ধর্মটাকে হেয়প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। কাজেই আমি এটাই আপনাদের কাছে চাইবো, যে করেই হোক এর হাত থেকে আপনাদের ছেলে-পেলেদের মুক্ত রাখতে হবে। আমাদের সমাজে বিশিষ্টজনেরা আছেন, শিক্ষকরা আছেন, মসজিদের ইমামরা আছেন, ওলামায়ে কেরাম আছেন এবং বিভিন্ন পেশাজীবী এবং অভিভাবক সকলকে আমি অনুরোধ রাখবো যে, কাদের ছেলে-মেয়েরা এ ধরনের জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে, স্কুল-কলেজে কারা অনুপস্থিত রয়েছে- তার যেন খোঁজ-খবর নেন এবং কোনভাবেই এসব কোমলমতি যেন বিভ্রান্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এটা প্রতিরোধে আমরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি এবং আজ যে গণসচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে এবং আজকে যে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ কথা বললেন, আপনাদের কাছ থেকে যে, তথ্য আমরা পেলাম তাতে আমি খুব আশাবাদী যে বাংলাদেশ একটা শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এখানে সন্ত্রাস ও জাঙ্গবাদেও কোন স্থান থাকবে না। মাদকের হাত থেকে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করতে হবে। কাজেই সকলকে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে।