×
ব্রেকিং নিউজ :
চট্টগ্রামে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে একসঙ্গে কাজ করবে সিএমপি ও চসিক চাঁদপুরের চরাঞ্চলের নির্বাচনী এলাকায় কোস্টগার্ডের মহড়া জয়পুরহাটে ভ্যান চালক আবু সালাম হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদন্ড নওগাঁর ৩টি উপজেলার নির্বাচন আগামীকাল গাজার দিকে রাফাহ ক্রসিং-এ ‘অপারেশনাল কন্ট্রোল’ নিয়েছে ইসরায়েল বাহিনী মহামারী মোকাবেলায় প্রস্তুতি ও সাড়াদানে উচ্চ-পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃত্ব অপরিহার্য : প্রধানমন্ত্রী বারি পরিদর্শনে চীনের আনহুই একাডেমি প্রতিনিধি দল থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান রাষ্ট্রপতির বর্তমান সরকারের আমলে কোন শিশুই অবহেলিত থাকবে না: ডেপুটি স্পিকার কাল হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
  • প্রকাশিত : ২০২৩-০৫-১৩
  • ২৩৪৯৬৫ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' আতংকে কক্সবাজারের উপকূল এলাকার লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে আসা শুরু করেছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আজ শনিবার সকাল থেকে জেলার ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে। লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য প্রচারণা চালানো হচ্ছে। 
আজ শনিবার সকাল থেকে কক্সবাজার সদরের পৌর প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক মানুষ। শহরের নিচু এলাকা সমিতি পাড়া থেকে এসব লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছে। এখানে আশ্রয় নেয়া শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ঘর নিচু এলাকায়। সমুদ্রের পানিতে ডুবে যেতে পারে। তাই প্রাণ বাঁচাতে বাচ্চাদের নিয়ে আগেই চলে এসেছি।’ 
‘জহুরা বেগম নামে একজন বলেন, ‘আমার স্বামী অসুস্থ। তাই আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসলাম।’ তিনি বলেন- প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং করে বলা হচ্ছে, আজ সন্ধ্যা থেকে ঘূর্ণিঝড় শুরু হতে পারে। লোকজন আতংকের মধ্যে রয়েছে।’
কক্সবাজার জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো: জাহাঙ্গির আলম বলেন, সকাল থেকে উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে মহেশখালীর মাতারবাড়ি, ধলঘাটা, টেকনাফের শাহপরির দ্বীপ এবং সেন্টমার্টিনে লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজনকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে রান্না করা এবং শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। 
তিনি জানান- কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে । নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মোবাইল নম্বর- ০১৮৭২৬১৫১৩২। এছাড়াও সকল উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। 
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জানান- ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ শনিবার বিকেল থেকে প্রবল বর্ষণসহ ঝড়ো হাওয়া শুরু হতে পারে। এতে জেলার নিচু এলাকা ডুবে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তিনি জানান সেন্টমার্টিন দ্বীপকে সর্বাধিক ঝুুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করে লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এখান থেকে ইতিমধ্যে আড়াই হাজার লোকজনেক টেকনাফে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।  
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যারা আশ্রয় গ্রহণ করবেন তাদের খাদ্য সামগ্রী দেয়া হবে। তিনি জানান ৫৭৬ আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ৫ লাখের বেশী লোক আশ্রয় নিতে পারবে। তিনি জানান জেলার উপকূলীয় এলাকায় রেড ক্রিসেন্ট এর ৮,৬০০ স্বেচ্ছাসেবক ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তারা লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যানবাহন দিয়েও লোকজনকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি জানান- ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অতি বৃষ্টিতে পাহাড় ধ্বসের আশংকাও রয়েছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। 
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলা ও সব উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জরুরী ত্রাণ হিসেবে ১০ লাখ ৩০ হাজার নগদ টাকা, ৪৪০ মেট্টিক টন চাল, ৭ মেট্টিক টন শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি ও ১৯৪ বান্ডিল ঢেউ টিন মজুত রাখা হয়েছে।
দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ‘মোখা’য় পরিণত হয়েছে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব শুরু হতে পারে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৮ নম্বর মহা বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস প্রধান আবদুর রহমান জানান, গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর প্রচন্ড উত্তাল রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামসহ পার্শবর্তী এলাকাসমূহকে ৮ নম্বর মহা বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat