×
ব্রেকিং নিউজ :
শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালা মিলনায়তন ও মহড়া কক্ষ সাময়িকভাবে খুলছে ১১ অক্টোবর শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে রংপুরে মাল্টিমিডিয়া ক্যাম্পেইন শুরু এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১৫ অক্টোবর দুর্গাপূজাকে উৎসবমুখর করতে মণ্ডপে থাকবে বিএনপি নেতা-কর্মীরা: বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোট যানবাহনের প্রকৃত অবস্থা নিরূপণের সিদ্ধান্ত সরকারের আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সংবিধান সংস্কারে পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠন উপাচার্য ও প্রো-উপাচার্য নিয়োগের বিষয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা শিক্ষা উপদেষ্টার বাংলাদেশ হতে সমুদ্রপথে হজযাত্রী প্রেরণের সম্মতি সৌদি সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জয়নুল আবদিন ফারুকের সেন্টমার্টিনে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
  • প্রকাশিত : ২০২৪-১০-০১
  • ২৩৪৪৩৮৫ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সদ্য প্রয়াত সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ছিলেন একজন আপসহীন সাংবাদিক নেতা। সাংবাদিকদের রুটি-রুজির আন্দোলনে তিনি সব সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আজ এক নাগরিক শোকসভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
তারা বলেন, ‘রুহুল আমিন গাজীর মতো এমন সাহসী নেতৃত্ব সাংবাদিক জগতে বিরল। দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যখনই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তখনই তিনি বুক চিতিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। সর্বশেষ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় অসুস্থ থাকার পরও তিনি রাজপথে নেমে সাংবাদিকদের সাহস জুগিয়েছেন। তার মৃত্যু সাংবাদিকতা জগতে একটি শূন্যতা সৃষ্টি করেছে।’ 
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত এক নাগরিক শোকসভায় সাংবাদিকদের জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও রাজনৈতিক নেতারা এসব কথা বলেন। 
এ সময় বক্তারা আরও বলেন, সাংবাদিকদের অন্যতম সর্বোচ্চ এই নেতার মারাত্মক কিডনির সমস্যা ছিল। এরপরও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার তাকে গ্রেফতার করে ১৭ মাস জেলে রাখে। সেখানে তাকে উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হয়নি। চিকিৎসায় অবহেলা করে তাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এজন্য স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার এবং ওই সময় দায়িত্বপালন করা কারাগারের জেলার ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা উচিত। তাদের গ্রেফতার করে বিচার করতে হবে। 
ডিইউজের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল এবং ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংবাদিক নেতা ড. আব্দুল মান্নান। 
আরো বক্তৃতা করেন, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বর্তমান সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন ও সরদার ফরিদ আহমদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ ও ইলিয়াস খান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানী, বিএফইউজের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার ও এ কে এম মহসিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, প্রচার সম্পাদক সাজাহান সাজু, ডিইউজের সহ-সভাপতি রফিক মুহাম্মদ ও রাশেদুল হক, আমার দেশের বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহনেওয়াজ, ফেনী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সিদ্দিক আল মামুন ও মুন্সিগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন। 
এছাড়া রুহুল আমিন গাজীর ছেলে আফফান আবরার আমিন তার পিতার স্মৃতিচারণ করেন। 
সভা সঞ্চালনা করেন, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব বাছির জামাল, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার ও ডিইউজের কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আলমগীর হোসেন। 
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘রুহুল আমিন গাজী ভাই নেই, বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয়। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় থেকেই তাকে চিনি। তিনি ছিলেন একজন অসীম সাহসী নেতা। প্রতিকূল পরিবেশেও তিনি সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। সর্বশেষ ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতনের আগের দিনও তিনি অসুস্থ অবস্থায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পেশাজীবীদের আন্দোলনে রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’ 
ডা. জাহিদ বলেন, ‘রুহুল আমিন গাজীর একটি কিডনি কেটে ফেলতে হয়েছিলো। এ ধরনের রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসা দিতে হয়। কিন্তু তাকে জেলে নিয়ে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হয়নি। তাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি মূলত একজন শহীদ।’ 
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘রুহুল আমিন গাজী ভাইকে হারিয়ে একটি শূন্যতা অনুভব করছি। আমি খুলনা প্রেস ক্লাবের সদস্য ছিলাম। তখন থেকেই গাজী ভাইকে চিনি। তার মত এমন সৎ সাহসী নেতৃত্ব বিরল। তার মধ্যে কোন মৃত্যুভয় ছিলো না। কোন ভীরুতা ছিলোনা। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ সাংবাদিকদের পেশা বিরোধী সব কালাকানুনের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ করেছেন। এজন্য তাকে ১৭ মাস কারাগারে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তার পরিবারকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে।’ 
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, রুহুল আমিন গাজী সাংবাদিক জগতের একটি ঐক্যের নাম ছিলেন। তিনি গণতন্ত্রের মুক্তি ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি আজ নেই, কিন্তু নতুন যে সরকার রয়েছে সেখানে ফ্যাসিবাদের দোসররা রয়ে গেছে। অন্তর্র্বর্তী সরকার আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের পাশে বসিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। তাদের মনে রাখতে হবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তারা এখানে বসার সুযোগ পেয়েছে। তারা ভুল করলে হাসিনার মত তাদেরও পরিণতি একই রকম হবে। 
কাদের গণি চৌধুরী বলেন, রুহুল আমিন গাজী দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে সাংবাদিকদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। শুধু এটিই নয় তিনি গণতন্ত্র রক্ষা ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। একটি দিনের জন্যও তিনি বিরতি দেননি। 
তিনি বলেন, বর্তমান মুক্ত বাংলাদেশে মাহমুদুর রহমান জেলে কেন? তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। না হলে আমরা আবারো রাজপথে নামতে বাধ্য হবো। 
জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি কবি হাসান হাফিজ বলেন, রুহুল আমিন গাজীকে নিয়ে একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করা যেতে পারে। তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম তার সম্পর্কে জানতে পারবে। তার মত আপসহীন লড়াকু নেতৃত্বের ইতিহাস ধরে রাখতে হবে। 
সভাপতির বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম বলেন, রুহুল আমিন গাজী আন্দোলন সংগ্রামে একজন সাহসী নেতা ছিলেন। যেকোন কর্মসূচিতে তাকে ডাকলেই চলে আসতেন। রুটি-রুজির আন্দোলনে তার সমকক্ষ কোন নেতা ছিলো বলে আমার জানা নেই। তিনি কর্ম, সাহস ও ডেডিকেশন দিয়েই নেতা হয়েছিলেন। আন্দোলন সংগ্রামে তিনি ছিলেন আমাদের বটগাছ। তার শূন্যতা আমরা পূরণ করতে পারবো কিনা জানিনা। 
রুহুল আমিন গাজীর ছেলে আফফান আবরার আমিন বলেন, আমার বাবাকে যেভাবে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়েছে তাতে আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি খুবই দেশপ্রেমিক ছিলেন। সব সময় দেশের মানুষের কথা ভাবতেন। আমার বাবা জীবনের শেষ সময়ে আমাকে বলে গেছেন, তিনি একটি বৈষম্যহীন, চাঁদাবাজ-দুর্নীতিমুক্ত মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র দেখতে চান। আশা করি সাংবাদিক সমাজ সেটি বাস্তবায়নে ভুমিকা রাখবেন। তাহলেই আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat