নিজস্ব প্রতিনিধি:-
খাগড়াছড়ি: উৎসবের নগর পার্বত্য জনপদ। চাকমা, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের পর শুক্রবার শুরু হলো মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব। আর এই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ জলকেলী বা পানিখেলা। পারষ্পরিক মৈত্রির বন্ধন অটুট রাখা এবং পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে ফেলায় এ জলকেলীর মূল উদ্দেশ্য।
একদিকে ঐতিহ্যবাহী লুঙ্গিতে মারমা তরুণ অন্যদিকে বর্ণিল সাজে মারমা তরুণী নিদিষ্টি দূর থেকে এই জলকেলী খেলে থাকেন। অনেকে আবার এ সময় নিজের প্রিয় মানুষটিকে বেছে নেন।“জলকেলী”র চারপাশে হাজারো মানুষের ভিড়। পর্যটক, অতিথি, সংবাদকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ। এমন দৃশ্য দেখতে এবং স্মরণীয় করে রাখতে সবাই ব্যস্ত। কারণটাও অবশ্যই জটিল। এমন রঙিন খেলাতো বছরে একবারি আসে।একদিকে বর্ণিল সাজে তরুণীর দল। অন্য প্রান্তে ঐতিহ্যবাহী লুঙ্গি পড়া তরুণের দল। তাদের পাশে নৌকা আর বড় হাড়ি ভর্তি পানি, হাতে আছে জগ। মাঝে নির্দিষ্ট একটি দূরত্বে থেকে বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় একে অপরের প্রতি ধীরে ধীরে পানি নিক্ষেপ। নিজেদের ঐতিহ্যবাহী বর্ণিল সাজে সেজে জলকেলীতে মেতে উঠেন মারমা তরুণ তরুণীরা।এই জলকেলি পবিত্রতার প্রতিক হিসেবেও দেখা হয়।শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া সাংগ্রাই উৎসব চলবে তিনদিন। সাংগ্রাই, আক্যে, আতাদা নামে এই উৎসব পালন করবে মারমা জনগোষ্ঠি। থাকবে নানা আয়োজন। বিভিন্ন জনগোষ্ঠির কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যে ভরপুর উৎসব দেখতে সারাদেশের মানুষ এ সময় পাহাড়ে ছুটে আসে।জলকেলির আগে পানখাইয়া পাড়া বটতল প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য সাংগ্রাইং র্যালি বের করা হয়। র্যালির উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এসময় পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মীর মুশফিকুর রহমান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সরকারী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।ঐতিহ্যবাহী ও বৈচিত্র্যপূর্ণ মারমা পোষাকে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে বর্ণিল র্যালিটি শহর প্রদক্ষিণ করে।পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠিসমূহের প্রধানতম সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব বৈসাবির আনন্দে ভাসছে পাহাড়ি জনপদ। শুক্রবার চাকমাদের গয্যাপয্যা বিজু। পাড়ায় পাড়ায় চলছে নানান উৎসব। চলছে ত্রিপুরাদের গরয়া নৃত্য।