রাকিব হত্যা মামলার হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
কোর্ট রিপোর্টার : –
পায়ু পথে হাওয়া ঢুকিয়ে খুলনার শিশু রাকিব হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেয়া হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রায় প্রদানকারী বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের স্বাক্ষরের পর বুধবার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গত ৪ এপ্রিল এ মামলার প্রধান আসামি মো. শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টুর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।রাকিব হত্যার ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিল খারিজ এবং বিচারিক আদালতের রায় পরিমার্জন করে এ রায় দেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর শিশু রাকিব (১২) হত্যার দায়ে প্রধান আসামি মো. শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টুকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিলরুবা সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামি শরীফের মা বিউটি বেগমকে খালাস দেন আদালত।সাধারণত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের পূর্বে হাইকোর্টের অনুমতির প্রয়োজন হয়। ডেথ রেফারেন্সের পাশাপাশি বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেন। পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়।২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাকিব হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। এরপর গত ১০ জানুয়ারি রাকিব হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে গত ২৯ মার্চ রায়ের দিন ৪ এপ্রিল ধার্য করেন উচ্চ আদালত।হাইকোর্টে ১১ কার্যদিবসের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও বিলকিস ফাতেমা। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এএসএম আবদুল মুবিন ও গোলাম মো. চৌধুরী আলাল।পরে আলাল বলেন, রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিলো না আসামিদের। তারা বুঝতে পারেননি যে, ওই কাজ করলে ভিকটিমের মৃত্যু হবে। এছাড়া ঘটনা ঘটার পর আসামিরা পালিয়ে না গিয়ে তাকে (রাকিব) নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে গেছেন, রক্ত দিয়েছেন। এসব বিষয় বিবেচনা করে আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং জরিমানার আদেশ দেন।উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বিকেলে খুলনার টুটপাড়ায় শরীফ মোটরস নামে এক মোটরসাইকেলের গ্যারেজে নির্যাতন করে রাকিবকে হত্যা করা হয়। পরের দিন রাকিবের বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে শরীফ, শরীফের সহযোগী মিন্টু খান ও মা বিউটি বেগমের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। বহু আলোচিত এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে মামলা হওয়ার ৯৬ দিন পর রায় ঘোষণা করা হয়।