সংশোধিত ব্যাংকিং আইনে ব্যাংক পরিচালক পদে সুশাসনের পরিপন্থী
নিজস্ব প্রতিনিধি:-
সংশোধিত ব্যাংকিং আইনে ব্যাংক পরিচালক পদে এক পরিবারের চারজন ও টানা নয় বছর দায়িত্ব পালনের সুযোগ সুশাসনের পরিপন্থী। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এই মন্তব্য করেছেন।
আজ শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) আয়োজিত ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আজিজুল ইসলাম।সম্প্রতি ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, সম্প্রতি যে ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের সংশোধন করা হয়েছে, যার ফলে এক পরিবারের চারজন সদস্য পরিচালনা পরিষদে থাকতে পারবেন, যেখানে আগে ছিল দুজন। আগে কোনো একজন পরিচালকের টেনিউর ছিল ম্যাক্সিমাম ছয় বছর একনাগাড়ে। সেটাকে এখন বাড়িয়ে করা হয়েছে নয় বছর। এটা কিন্তু ব্যাংকিং খাতের সুশাসনের পরিপন্থী বলে আমি মনে করি।আজিজুল ইসলাম আরো বলেন, অর্থঋণ আদালতে দায়ের করা মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। ভ্যাটের হার নির্ধারণে সাম্যতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখা উচিত। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর ভ্যাট হার বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশে এটি ১০ শতাংশ হওয়াই যুক্তিযুক্ত বলে অভিমত প্রকাশ করেন তিনি।আগামী জাতীয় বাজেট প্রসঙ্গে আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন ক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে বাজেট প্রণয়ন করা উচিত। তা না হলে এটি কাগুজে বাজেট হিসেবে বিবেচিত হবে।ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ঝুঁকিতে পড়বে। এ জন্য ব্যাংকে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আমানত ও ঋণের সুদের হারের পার্থক্য কমানোর তাগিদ দেন আজিজুল ইসলাম।অনুষ্ঠানের সভাপতি হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বড় বড় প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে এক শ্রেণির প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, আমলা ও অসাধু ব্যবসায়ীরা কালো টাকার পাহাড় তৈরি করছেন। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগে মন্দাসহ নানা কারণে এসব অর্থ তাঁরা বিদেশে পাচার করছেন।কিরণ আরো বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী এক কোটিরও বেশি অভিবাসী প্রতিবছর ১৪ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠাচ্ছেন। আর দুর্নীতিবাজরা দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে সেকেন্ড হোম ও বেগমপল্লী তৈরি করছেন।
থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের নামে দেশের টাকা পাচার করা হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতি ক্রমশ রক্তশূন্য হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেন কিরণ।প্রতিযোগিতায় আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশকে হারিয়ে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি দল বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী বিতার্কিকদের ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, অধ্যাপক আবু রইস ও তানভীর সিদ্দিকী।