×
ব্রেকিং নিউজ :
হবিগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তরুণ নেতৃত্ব অপরিহার্য : রাশেদ খাঁন ইলিশ সংরক্ষণে চাঁদপুরে কোস্ট গার্ডের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম বগুড়ায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব পটুয়াখালীতে এনসিপির কার্যালয় উদ্বোধন দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন উৎসবে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি রাত ৯টায় উপকূল অতিক্রম করতে পারে গবেষণালব্ধ বই যুগের আলোকবর্তিকা : ধর্ম উপদেষ্টা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব বিমানবন্দরে দুর্ব্যবহার এনসিপির নেতাকর্মীদের, সংবাদ সম্মেলন বর্জন সাংবাদিকদের
  • প্রকাশিত : ২০২৩-১০-০৮
  • ৭২৬৬ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লা  জেলার খাদির পোশাক সুখ্যাতি দেশজুড়ে। কুমিল্লায় থেকে খাদি কাপড় ছাড়া খালি হাতে ফিরেছেন এমন লোক কমই পাওয়া যাবে।
অফ হোয়াইট রং, মোটা কাপড়। দেখলেই যে কেউ বুঝতে পারে, কাপড়টা খাদি। এক সময় খাদি কাপড় শালেই বেশি ব্যবহার করা হলেও এখন ব্যবহারে এসেছে বৈচিত্র্য। খাদি কাপড় দিয়ে এখন তৈরি হচ্ছে পাঞ্জাবী, ফতুয়া, শার্ট, থ্রি-পিস, শাড়ি এমনি বিছানার চাদরও।অনেকে আবার পছন্দমতো বানানোর জন্য কিনেন থানকাপড়ও।
কুমিল্লার খাদি কাপড় বিক্রেতা মনির হোসেন  বলেন, খাদি কাপড় চলে ভালো। বৈশাখ বা ঈদ না, সারা বছরই এ কাপড়ের চাহিদা রয়েছে। খুচরা কাপড় বেশি বিক্রি হয়। এ কাপড় দিয়ে পাঞ্জাবি, শার্ট, জোব্বা তৈরি হয়। খাদি কাপড় দিয়ে মেয়েরাও পোশাক বানায়।
খাদি কাপড় বিক্রেতা অপর ব্যবসায়ী তানভীর আহমেদ   বলেন, এখন তো খাদি কাপড়ে রঙ ও ডিজাইনের ভিন্নতা এসেছে। দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোতে খাদির কদর বেড়েছে। মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করে তারা নিত্যনতুন ডিজাইনের খাদি কাপড়ের পোশাক বাজারে আনছে। খাদি কাপড় মূলত কুমিল্লার ঐতিহ্য। খাদি বেশ জনপ্রিয়। চরকা ও হস্তচালিত তাঁতে বোনা হয় খাদি কাপড়। প্রায় সারা বছরই খাদির চাহিদা থাকে। তবে যে উৎসবে চাহিদা বেড়ে যায়। এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় খাদি কাপড় আরও অনন্য হয়েছে।
কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য গবেষক আহসানুল কবির বলেন, খাদির গোড়াপত্তন হয়েছে ১০০ বছরের বেশি সময় আগে। ওই সময় শুধু খাদি কাপড় নয়, কুমিল্লার বেনারসি শাড়িরও তুমুল চাহিদা ছিল। সারা বিশ্বেই কুমিল্লার শাড়ি ও খাদি কাপড়ের নামডাক ছিল। স্বদেশি আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধী বিদেশি পণ্য বয়কটের ডাক দেন। মোটা কাপড়, মোটা ভাত-সর্বত্র এমন আওয়াজ ওঠে। স্বদেশি আন্দোলনের পর খাদি কাপড়ের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। মহাত্মা গান্ধী নিজেও খাদির চাদর পরিধান করতেন। কুমিল্লার মানুষ খাদি কাপড় পছন্দ করতেন। বড় বড় নেতারা খাদির পায়জামা, চাদর, পাঞ্জাবি পরে গৌরববোধ করতেন। এটার প্রচলন গত ৩০ বছর আগেও ব্যাপক হারে ছিল। খাদি কুমিল্লাকে ব্র্যান্ডিং করে।
প্রবীণ ব্যবসায়ী খাদিঘরের স্বত্বাধিকারী সোনিল কুমার বলেন, কুমিল্লার খাদি শিল্পের একটা শক্ত ভিত আছে। বর্তমানে খাদি শিল্পে অনেক নতুন নতুন ডিজাইন এসেছে, কারণ ১৯২২ সালের প্রেক্ষাপট ও চাহিদা এক নয়। শতবর্ষের খাদি পণ্য তার গুণগত মান বজায় রেখে আধুনিকতার সংমিশ্রণে প্রতিযোগিতার বাজারে চাহিদা ধরে রেখেছে। পৃথিবীর যেখানে বাঙালি কমিউনিটি আছে সেখানেই খাদি কাপড়ের প্রসার ঘটেছে। কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, কুমিল্লার খাদি কাপড়ের বিশ্ববাজার ধরার মতো মান  ও চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
কুমিল্লার চান্দিনার বেলাশ্বর গ্রামের ক্ষিতিশ দেবনাথ ও তার ভাতিজা মতিলাল দেবনাথ এই গ্রামে এখনো খাদি কাপড়ের উৎপাদন ধরে রেখেছেন। ক্ষিতিশ দেবনাথের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কাচারি ঘরের মতো একটি ঘর। ঘরের ভিতর চরকি, চরকা আর হ্যান্ডলুম মেশিন। যে মেশিনে হাতের সাহায্যে তাঁত বোনা হয়। গর্তে বসে দুই হাত দিয়ে টেনে সুতা থেকে কাপড় তৈরি হয়। তুলা থেকে সুতা বানানো হয় চরকায়। পাশে চৌকির ওপর সুতা ও থান কাপড়ের ভাঁজ ফেলে রাখা হয়েছে।
বর্তমানে কুমিল্লা শহরে খাদির নাম সংযুক্ত দোকান আছে চার শতাধিক। নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের পশ্চিম দিক থেকে কান্দিরপাড়ের রামঘাটলা পর্যন্ত দোকানগুলোর অবস্থান। এসব দোকানে পাঞ্জাবি, ফতুয়া, থ্রি-পিস ও চাদরের চাহিদা বেশি। দিনে যে পরিমাণ পোশাক বিক্রি হয়, তাতে অন্তত ২০ হাজার গজ কাপড়ের দরকার হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat