দিনাজপুরে ২ দিনের মিলন মেলা আনন্দ উল্লাসে সাওতাল সম্প্রদায়ের বাহা উৎসব পালিত
দিনাজপুর প্রতিনিধি :-
দিনাজপুরে সাওতাল সম্প্রদায় নিজস্ব ঐতিহ্যে নেচে-গেয়ে আনন্দের সাথে ২ দিনের কর্মসূচীর মাধ্যমে বরণ করলেন ঋতুরাজ বসন্ত উৎসব তথা তাদের নিজস্ব কৃষ্টি “বাহা” উৎসব।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার আদিবাসী পল্লী বারকোনা ফুটবল মাঠে ২ দিন ব্যাপী “বাহা” উৎসবের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার রাতে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বাহা উৎসব উদযাপন কমিটি এবং আদিবাসী সাংস্কৃতিক পরিষদের আয়োজনে নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে সাওতাল সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব কৃষ্টি সংস্কৃতির আদলে বরণ করেন ঋতুরাজ বসন্তকে “বাহা” উৎসবের মাধ্যমে। দিনভর ধর্মীয় পুজা-অর্চনা ও ভারতের জনপ্রিয় সাওতাল ও বাউল লোকসঙ্গীত শিল্পী রথীন কিস্কুর মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ ও শিশু সাঁওতাল অংশ নেন। বিভিন্ন বর্ণের আদিবাসীদের আগমনে মিলন মেলায় পরিনত হয় বারকোনার ফুটবল মাঠ। বাহা পরবের জন্য নির্দিষ্ট একটি পূজার স্থান থাকে। একে সাঁওতালরা জাহের থান বলে। তিনটি ছোট ছোট খড়ের ঘর দিয়ে জাহের থান তৈরি হয়। গ্রামের নাইকে অর্থাৎ পুরোহিত পরিস্কার ধুতি পড়ে পূজা থানে যান। নাইকের হাতে কাঁসার থালাতে থাকে নতুন নতুন ফুল। এসময় সাঁওতাল তিন দেবতা জাহের এঁরা (ফুলের দেবী), মারাঙবুরু (সাঁওতাল দেবতা প্রধান), পারগানা বঙ্গা (এলাকার দেবতা) এর পুজা করেন নাইকে। পরে স্থানীয় আদিবাসী শিল্পীদের পাশাপাশি ভারতের জনপ্রিয় সাঁওতাল ও বাউল লোকসঙ্গীত শিল্পী রথীন কিস্কুর নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি দল সঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। ২ দিনের বাহা উৎসবে বক্তব্য রাখেন উদযাপন কমিটির আহবায়ক বাসন্তি মুরমু, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, সাধারন সম্পাদক শফিন চন্দ্র মুন্ডা, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, গ্রাম বিকাশ কেন্দ্রের পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা হবিবর রহমান, মোশাররফ হোসেন, যোসেফ হেমরম, শিক্ষার্থী রমিতা হাসদা ও সোহাগী সরেন প্রমুখ।
দিনাজপুরে গণহত্যা দিবস পালিত
দিনাজপুর প্রতিনিধি :-
দিনাজপুরে নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালিত হলো প্রথমবারের ন্যায় গণহত্যা দিবস। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন উপলক্ষে স্থানীয় চেহেলগাজী মাজারস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবরে শ্রদ্ধাঞ্জলী ও স্মৃতি সৌধে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে নেতৃবৃন্দ পরে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ করেন। বড়মাঠের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহর আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির নেতৃত্বে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন। জেলা প্রশাসন আলোচনা সভা, প্রামান্য চিত্র প্রদর্শনী ও দেশাত্ববোধক সঙ্গীতের আয়োজন করেন। গণহত্যা দিবস উপলক্ষে সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি চিত্ত ঘোষের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অংশ নেন সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসানুল আলম সাথী, সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিক, কামরুল হুদা হেলাল, আসাদুল্লাহ সরকার, ইদ্রিস আলী, সালাহউদ্দীন আহমেদ, কাশী কুমার দাস ঝন্টু, মুকুল চট্টপাধ্যায়, রফিকুল ইসলাম ফুলাল, আবুল কাশেম, ইফতেখার আহমেদ পান্না। আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক শামীম রেজা। আলোচনা শেষে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বিভীষিকাময় রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা নির্মমভাবে হত্যা হওয়ায় তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে শনিবার সকালে এক শোক র্যালী শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সাইফুদ্দিন আখতার, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মালেক সরকার, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ শুভ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কল্যাণ সমিতির সভাপতি শরীফ আজাদ জয়, আরমান সরকার, রাজীব উল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেন, রাসেল চৌধুরী, অপূর্ব, জুয়েল, নয়ন, শামীম প্রমুখ।