আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ধর্মে বিশ্বাসীদের সংখ্যা বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির জনমত জরিপ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিচার্স সেন্টারের তথ্য, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের শতকরা ৭৮ শতাংশ নাগরিক কোনো না কোনো ধর্মে বা বিধাতায় বিশ্বাসী, চার বছর আগে যা ছিল ৭২ শতাংশে। এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
পিউ রিচার্স সেন্টার জানায়, ধর্মকে রাজনীতির বাইরে রাখা না রাখা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা একেবারে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। ৪৯ শতাংশ নাগরিক মনে করেন, ধর্মকে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে। কিন্তু ৪৮ শতাংশ এ মতের বিপক্ষে।
যুক্তরাষ্ট্রে সফররত বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলকে এ তথ্য জানিয়েছে পিউ রিসার্চ সেন্টার। প্রতিষ্ঠানটির গবেষক এলিজাবেথ স্কুইপ্যাক যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতি এবং নাগরিক জীবনে ধর্মের ভূমিকা সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে উপরিউক্ত তথ্যগুলো দেন।
পিউ রিসার্চ সেন্টার জানায়, ২০১৬ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রশ্ন উঠেছিল প্রেসিডেন্টের ধর্মবিশ্বাস থাকা উচিত কি না। পরে তাদের এক জরিপে উঠে আসে, নির্বাচনে জয়ী রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ধর্মে বিশ্বাসীদের প্রায় ৭২ ভাগ ভোট পান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন পেয়েছিলেন ২৩ শতাংশ ধর্ম বিশ্বাসীদের সমর্থন।
ওই জরিপে দেখা যায়, ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের চেয়ে রিপাবলিকানরা খুবই রক্ষণশীল। ৪৭ শতাংশ আমেরিকান নাগরিক রিপাবলিক পার্টিকে ধর্মবান্ধব, আর ২৯ শতাংশ নাগরিক ডেমোক্রেট পার্টিকে ধর্মবান্ধব দল মনে করেন।
একই সঙ্গে দেশটির নাগরিকদের ৭২ শতাংশ মনে করেন, ধর্মে অবিশ্বাসী প্রেসিডেন্টের হাতে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপদ নয়।
গত এক সপ্তাহ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি ও ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের একাধিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষা অনুষদের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে মতবিনিময় হয় প্রতিনিধিদলটির।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শতকরা ৭২ শতাংশ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত যুক্তরাষ্ট্রে কোনো ধর্মকেই রাষ্ট্রীয়ভাবে আনুকূল্য দেওয়া হয় না। সেখানকার কোনো সরকারি স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয় না। ধর্মকে সরকার থেকে আলাদা রাখতে ধর্মীয় শিক্ষাকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং বেসরকারি পর্যায়ে রাখা হয়েছে। তবে, সব ধর্মের সুরক্ষা এবং তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অবারিত সুযোগ নিশ্চিত করে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার। এমনকি সব ধর্মীয় সংস্থাকে করের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ প্রজন্মের ৭২ শতাংশ মনে করে, ধর্ম প্রভাব হারাচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে বলতে গিয়ে দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল কমিউনিকেশন্স গ্রুপের (সিসিজি) প্রেসিডেন্ট আকরাম আর ইলিয়াছ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় স্বাধীনতা এমনই, এখানে মাত্র দুই ঘণ্টায় নতুন ধর্ম সৃষ্টি করা সম্ভব। সরকার বা রাষ্ট্র কোনো ধর্মকে সংজ্ঞায়িত করতে যাবে না।